দেশীয় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানে বাধ্যতামূলক ইসিআর মেশিন সংযোজন আদেশ বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে অনুষ্ঠিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় এ দাবি জানানো হয়।
হোটেল-রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানের পক্ষে আলোচনায় এনবিআরের কাছে দাবিগুলো তুলে ধরেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব এম রেজাউল করিম সরকার রবিন।
ইসিআর মেশিন সংযোজন আদেশ বাতিল করার পক্ষে তিনি যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন, দেশীয় রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানের ক্রেতা-ভোক্তা নিম্ন আয়ের তথা শ্রমজীবী, কর্মজীবী প্রান্তিক আয়ের মানুষ। বিলও ক্ষুদ্র অঙ্কের। এসব ক্ষুদ্র অঙ্কের বিল ইসিআর মেশিনে হিসাবকষে প্রিন্টেড বিল ইস্যু করে টাকা নেয়া অবাস্তব ও প্রায় অসম্ভব।
এছাড়া দেশীয় রেস্তোরাঁ ও গ্রামীণ দই-মিষ্টির দোকানের প্রায় সব মালিক অর্ধশিক্ষিত অথবা অশিক্ষিত ও নিজেই সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন। দক্ষ দুইজন অপারেটর ব্যতীত ইসিআর মেশিন চালানো সম্ভব নয়। আর এসব দোকানিরা প্রতিদিন বাকিতে মালামাল ক্রয় করে সন্ধ্যায় মূল্য পরিশোধ করেন। তাদের পক্ষে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ইসিআর মেশিন ক্রয় করা সম্ভব নয়।
ইসিআর মেশিন সংযোজন আদেশ বাতিলের পাশাপাশি আলোচনায় সমিতি পক্ষ থেকে আরও পাঁচটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে-
(এক). আবাসিক সুবিধা সম্বলিত তারকা মানের রেস্তোরাঁর শতভাগ বিক্রির ওপর ১৫ শতাংশ মুসক আরোপ করা।
(দুই). ঢাকা-চট্টগ্রামসহ মেট্রোপলিটন এলাকার আবাসিক সুবিধা সম্বলিত ও তারকা মান ব্যতীত এয়ার কুলার সংযোজিত রেস্তোরাঁর সমুদয় বিক্রির ৪০ শতাংশ-কে মূল্য সংযোজন ধরে তার ওপর ১৫ শতাংশ মুসক ধরা।
(তিন). দেশীয় সাধারণ খাবার কিন্তু এয়ারকুলার সংযোজিত রেস্তোরাঁর সমুদয় বিক্রির ২০ শতাংশকে মূল্য সংযোজন ধরে তার ওপর ১৫ শতাংশ মুসক আরোপ করা।
(চার). ওপরের তিন শ্রেশি ব্যতীত সব রেস্তোরাঁর সমুদয় বিক্রির ১০ শতাংশকে মূল্য সংযোজন ধরে তার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করা।
(পাঁচ). ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু অভিজাত মিষ্টান্ন দোকান বাদ দিয়ে সারা দেশের সব দই-মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে সেবার বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থের ২০ শতাংশের ওপর ভ্যাট আরোপ করা।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় হোটেল রেস্তোরাঁ মালিক সতিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।