বাংলাদেশে মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশনের (তেজস্ক্রিয়তা) মাত্রা উচ্চ পর্যায়ের, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বুধবার হাইকোর্টে দাখিল করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটিও আদালতকে জানাতে হবে।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে নির্ণয়ের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছেন রিটকারী আইনজীবী। পরে আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়ার জন্য ২৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদালতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক। পরে আদালত এফিডেভিট আকারে প্রতিবেদনটি দাখিল করার নির্দেশ দেন। এছাড়া আদালত এ বিষয়ে বিটিআরসির পদক্ষেপ জানতে চেয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
মোবাইল ফোন টাওয়ারের রেডিয়েশন নিঃসরণ নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
ওই সময় হাইকোর্ট রেডিয়েশনের মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। এছাড়া বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কয়েকটি মোবাইল ফোন টাওয়ার পরিদর্শন করে রেডিয়েশন বিষয়ে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেন।
এদিকে, সাত দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কমিটিতে বিজ্ঞানী, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং আণবিক শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কমিটিকে মোবাইল টাওয়ার থেকে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও পরিবেশগত প্রভাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ারগুলো থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চান হাইকোর্ট।
এরপর স্বাস্থ্য কমিটি করে নিরীক্ষা করে স্বাস্থ্যের ক্ষতির বিষয়টি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বিটিআরসিকে বলেছেন, রেডিয়েশনের মাত্রা কমাতে। এ প্রতিবেদনটি মঙ্গলবারের মধ্যে হলফনামা আকারে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।