সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্য সেবার দক্ষতা ও সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই প্রকল্পটিসহ এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গৃহীত পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৮৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে এটি একটি ধারাবাহিক কর্মসূচি। এর আগে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’
তিনি জানান, চলতি অর্থবছর থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়ে আগামী ২০২২ সালের জুনে এ কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হবে।
মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পটির জন্য বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের ইউএনএফপিএ সহ আরো দুটি সংস্থার কাছ থেকে ১৮ হাজার ৮৪৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে। বাকী ৯৬ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন,‘এ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, পরিবার পরিকল্পনা, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টি সেবা, সচেতনতামুলক কর্মকান্ড, প্রশিক্ষণ-উচ্চ শিক্ষা,ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্য ব্যবস্থাপনা, মানব সম্পদের উন্নয়ন এবং গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অুনমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ৪ হাজার ১৮৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আর বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১৮ হাজার ৮৪৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমুহের উন্নয়ন প্রকল্প’, এর ব্যয় ৪ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। ‘সরকারি কলেজসমুহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় হবে এক হাজার ৮০৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এছাড়া ২০০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প। ৯৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘গৌরনদী টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ প্রকল্প। ৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘বিসিআইআর এর আইএমএমএম এ একটি খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকরণ’ প্রকল্প। ‘যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ক (এন-৭০৬) যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ ব্যয় হবে ৩২৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ১৫৭ কোটি ২১ লাখ টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে ‘বগাছড়ি-নানিয়ারচর লংগদু সড়কের ১০ম কিলোমিটার চেংগি নদীর উপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প এবং ২৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে ‘ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প।
বৈঠকে মন্ত্রী পরিষদের সদস্য,সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।