রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডের লাল দালানখ্যাত সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ফের দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৫ মার্চ কারা ফটক দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। ২৭ মার্চ পর্যন্ত সাধারণ মানুষ এই কারাগার দেখার সুযোগ পাবেন।
২৪ মার্চ বিকেলে তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
কারা অধিদফতরের এআইজি (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার দুপুরে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার সকালে সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরেই এক সংবাদ সম্মেলনে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের বিস্তারিত গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তুলে ধরা হবে।
২৫-২৭ মার্চ পর্যন্ত ১শ’ টাকা মূল্যের টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা কারাগারের ভেতর ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। এর আগে জেলহত্যা দিবসে গত ২-৫ নভেম্বর এ ধরনের আয়োজন ছিল বলে তিনি জানান।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কারা অধিদফতর ও বেসরকারি সংস্থা জার্নির যৌথ উদ্যোগে কারা অভ্যন্তরে ‘বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা’ শীর্ষক বিশেষ দুর্লভ আলোচকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন থাকবে। প্রদর্শনীতে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রস্তাব, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন ভূমিকা ও সাতটি ধাপে কিভাবে স্বাধীনতা এলো তা স্থিরচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
এছাড়া এই মহান মার্চ মাসেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। তাই শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রদর্শনীরও আয়োজন থাকবে। নতুন প্রজম্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি তুলে ধরতে এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান কারা কর্মকর্তারা।
কারা সূত্র জানায়, কারা অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি জাদুঘর ও জাতীয় চার নেতা স্মৃতি জাদুঘরসহ প্রায় সকল সেল ও ওয়ার্ড খুলে দেয়া হবে। এ কারাগারটিতেই বঙ্গবন্ধু তার কারা জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন।
এবারের প্রদর্শনীতে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির মঞ্চ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জানান এআইজি (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন।
কারা সূত্র জানায়, দর্শনার্থীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে কারা অধিদফতর প্রথমবারের মতো গণহত্যা দিবস পালন ও স্বাধীনতার মাসের গুরুত্ব সব শ্রেণির মানুষের কাছে তুলে ধরতে এ বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করবে।