টেলিটক চলছে কর্তাদের খেয়াল-খুশিতে

টেলিটক চলছে কর্তাদের খেয়াল-খুশিতে

সার্ভিস রুল নেই, অর্গানোগ্রাম নেই। নেই কোনো বেতন কাঠামো। এমনকি নিয়োগ বিধিও নেই। আর এসব বিধি-বিধান না থাকায় উর্ধ্বতন কর্তাদের খেয়াল খুশিমত চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন কোম্পানি টেলিটক।

টেলিটক সূত্রে জানা গেছে, বিলুপ্ত বাংলাদেশ টেলিফোন ও তার বোর্ড (বিটিটিবি) ভেঙে ২০০৫ সালে টেলিটক গঠন করে সরকার। অথচ প্রতিষ্ঠার সাত বছরেও এখানে সার্ভিস রুল ও অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্গানোগ্রাম ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এই অর্গানোগ্রাম ও সার্ভিস রুলের দাবিতে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেকবার আন্দোলন করেছেন। ২০১০ সালে এ দাবিতে তারা অবস্থান ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। একই দাবিতে সম্প্রতি আবারো আন্দোলন শুরু হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা দেখা গেছে, সার্ভিস রুল ও অর্গানোগ্রামের খসড়া একাধিকবার টেলিটকের পরিচালনা পর্ষদে উপস্থাপনও করা হয়েছে। কিন্তু তা অনুমোদন পায়নি। বেতন ও অন্যান্য ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কোনো নিয়মই নেই টেলিটকে। এমনকি বাৎসরিক  ইনক্রিমেন্টের নিয়মও এখানে নেই। বিধি-বিধান না থাকায় নীতি-নির্ধারকদের মর্জি মাফিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা নির্ধারণ করা হচ্ছে। একই পদে থেকে দু’ধরনের বেতন দেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নিয়োগবিধি না থাকায় যখন যেভাবে খুশি লোক নিয়োগ করা হচ্ছে। বিগত দুই বছরে কোম্পানিতে দেড় শতাধিক লোক নিয়োগ করা হয়েছে। সহ-ব্যবস্থাপক পদে কখনো তিন বছরের অভিজ্ঞতা চেয়ে লোক নিয়োগ হয়েছে, আবার কখনো কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই এ পদে লোক নিয়োগের উদাহরণ রয়েছে। ব্যবস্থাপক পদে টেলিটকে চাকরি করছেন ৫ বছর ধরে-এমন কর্মকর্তার ওপরের পদে তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও তুলনামূলক কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এর আগে প্রকৌশল বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এবার হঠাৎ করে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে টেলিটকের থ্রি-জি প্রকল্পের জন্য ১৫ জন প্রকৌশলী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে আবার আন্দোলনে নামেন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।

জানা গেছে, টেলিটকে ৫/৭ বছর ধরে কর্মরত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পাওনা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তাদের পদোন্নতি দিচ্ছে না। উল্টো বাইরে থেকে লোক এনে বিভিন্ন শূণ্য পদ পূরণ করছে। টেলিটকের কর্মীদের দাবি, শূণ্য পদে নিজেদের যোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হোক। এরপর বাইরে থেকে লোক এনে অবশিষ্ট শূণ্য পদে নিয়োগ দেওয়া হোক।

কিন্তু কর্মীদের এসব দাবি-দাওয়াকে পাত্তা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।

দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কথা বলার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি সমিতিও গঠন করেছে। ‘টেলিটক কর্মকর্তা-কর্মচারী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। এই আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছি।’

এ বিষয়ে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ  করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অর্থ বাণিজ্য