ভারতে মারুতি-সুজুকি গাড়ির কারখানায় হামলা এবং ম্যানেজারকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ৩১ জনের মধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে হরিয়ানার গুরু গ্রামের আদালত। এছাড়া চার জনকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে চার বছরের জেল খাটার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
দোষী সাব্যস্ত বাকি ১৪ জন ইতিমধ্যে যত দিন জেল খেটে ফেলেছেন তা সাজা হিসেবে যথেষ্ট বলে রায় দিয়েছে আদালত।
দোষীদের প্রত্যেকেই মারুতি-সুজুকির মানেসর প্ল্যান্টের কর্মী। দিল্লির প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ওই প্ল্যান্টে ২০১২ সালে এক দল শ্রমিকের হাতে আক্রান্ত হন সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্তারা। কনফারেন্স রুমের মধ্যে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার অবনীশ কুমার দেবের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে থাকা তান্ডবে ম্যানেজমেন্টের অন্তত ৫০ জন কর্তা জখম হন। আক্রান্ত হয় পুলিশও।
গত ৯ মার্চ ১৪৮ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। বাকি ১১৭ জনকে খালাস দেয়া হয়।
মারুতি সংস্থা প্রতি বছর যে সংখ্যক গাড়ি তৈরি করে, তার এক তৃতীয়াংশই তৈরি হয় মানেসরের প্ল্যান্টে। ২০১২ সালের বেনজির গোলমালের পর সেই মানেসর প্ল্যান্ট মাস খানেকের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল মারুতি কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ দিন ধরে মানেসর প্ল্যান্টে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। সেই অসন্তোষই শেষ দিনে তান্ডবে রূপ নেয়।
শ্রমিকরলোহার রড ও নির্মিয়মান গাড়ির দরজার প্যানেল নিয়ে হামলা চালায়া। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজারকে পুড়িয়ে মারা হয়। সুপারভাইজার ও অন্য পদস্থ কর্মকর্তাদের খুঁজে বার করে হামলা চালানো হয়। গোটা কারখানা চত্বর জুড়ে ভাঙচুর চালানো হয়, জায়গায় জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
১২০০ পুলিশ পাঠিয়ে কারখানা নিয়ন্ত্রণে এনেছিল প্রশাসন। তবে ৯ জন পুলিশ কর্তাও সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন। ম্যানেজমেন্টের য়ে ৫০ জন কর্তাকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশই রক্তাক্ত ছিলেন, অনেকেই অচেতনও ছিলেন।
অবশ্য শ্রমিকদের দাবি ছিল, ম্যানেজমেন্টের ভাড়াটে বাউন্সাররা প্ল্যান্টের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। সেখান থেকেই নাকি গোলমালের সূত্রপাত।