মাছ মুরগি সবজির বাজারে বৈশাখী প্রভাব

মাছ মুরগি সবজির বাজারে বৈশাখী প্রভাব

বাংলা নববর্ষের আগমন যেন দ্রব্যমূল্যকে আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। পহেলা বৈশাখে ইলিশের দাম শুধু বেড়ে যাওয়া নয়, এটি বাড়িয়ে দিয়েছে মাছ-মুরগী সবজির দামও। আর দিশেহারা হয়ে পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষেরা।

শুক্রবার রাজধানীর কচুক্ষেত রজনীগন্ধা সুপার মার্কেট, মিরপুর ১৩ নম্বর কাঁচা বাজার ও সেনপাড়া কাঁচা বাজার এলাকায় ঘুরে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিশেষ করে বেড়েছে মাছের দাম। তবে নববর্ষকে উপলক্ষ্য করে ক্রেতারা মাছের বড় আকারের ও বৈচিত্রময় মাছের যোগান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এসব বাজারে প্রতি হালি ইলিশ ১ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া প্রতি কেজি চিংড়ি মাছ ৫০০ টাকা থেকে ১হাজার ১০০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা, আইড় ৩৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৩০০ থেকে  শিং  ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৪২০  থেকে ৪৫০ টাকা, কই মাছ ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, রুই মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাতলা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১০০-১২০ টাকা এবং তেলাপিয়া মাছ ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের দেশি মুরগি প্রতিটি  ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরু ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা, খাসি ৪৫০-৪৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায়।

শাক-সবজির বাজারে ঝিঙা ৫০টাকায়, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, শিম ৪০টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, করলা ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা লতি ৫০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, লাউ (১/১.২৫ কেজি) ৩০-৩৫ টাকা, আলু ১৮-২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  ডাটা শাক প্রতি আঁটি ২০ টাকা, পাট শাক ১০ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি আইটেমের মধ্যে নাজির শাইল ৪৫-৪৮ টাকা, মিনিকেট ৪২-৪৫ টাকা, আটাশ চাল ৩৬-৩৭ টাকা, পারি ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন ১৩৫ টাকা, সুপার তেল ১২০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

অন্য আইটেমগুলোর মধ্যে রসুন ৮০-১০০ টাকা, পেঁয়াজ ২০-২২ টাকা, আদা ৭০-৮০ টাকা, মশারী ডাল ৮০-১০০ টাকা, মুগডাল ১১০ টাকা, চিনি ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বেশি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বাইশটেকীর বাসিন্দা ইলিয়াস মোল্লা বলেন, ‘ইলিশ মাছ ছেড়ে অন্য মাছ কিনবো তারও কোন সুযোগ নেই। সেগুলোর দামেও আগুন লেগেছে। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামেরও একই অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘সব কিছুর দাম শুধু বাড়তেই থাকে, কমে না। কিন্তু আমাদের আয় যে বাড়ে না এ নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। এগুলোর দাম কমানোর কোনো কার্যকরী উদ্যোগ দেখি না। সবাই নাকি কি সব রাজনীতি ব্যস্ত থাকেন।’

এদিকে কচুক্ষেত্রের মাছ বিক্রেতা আবদুল আজিজ বলেন, ‘নববর্ষ উপলক্ষে মাছের চাহিদা বেশি থাকায় দাম খানিকটা বেশি। বেশি দামে মাছ বিক্রি করায় আমাদের খুচরা বিক্রেতাদের খুব বেশি লাভ হচ্ছে তা কিন্তু নয়। পাইকাররাই মাছের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

মুদি ব্যবসায়ী আজাদ বলেন, ‘আসল লাভতো খায় পাইকাররা। অথচ দোষ সব পড়ে খুচরা বিক্রেতাদের ঘাড়ে। সরকার বড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। খুচরা বিক্রেতারা দূর্বল আর হাতের নাগালে থাকার কারণে ক্রেতারাও আমাদের উপর রাগ ঝাড়েন।’

অর্থ বাণিজ্য