আলোর পথে সেই জুনায়েদ

আলোর পথে সেই জুনায়েদ

অন্ধকার জগত থেকে আলোর পথে ফিরে এসেছেন ‘আমি জুনায়েদ’ খ্যাত জুনায়েদ আল ইমদাদ। মাদকের করাল গ্রাস থেকে নিজেকে মুক্ত করে যুক্ত হয়েছেন সেবামূলক কাজে। জুনায়েদ এখন আর আগের মতো নেই। বদলে গেছেন। নেই সেই লম্বা চুলও।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচিত জুনায়েদ আল ইমদাদ সম্প্রতি মুখোমুখি হয়েছিলেন জাগো নিউজের। শুনিয়েছেন সেদিনের ঘটনার পিছনের গল্প এবং আলোর পথে আসার গল্প।

গতবছরের ১৩ মার্চ ফেসবুকের কল্যাণে ধানমন্ডি লেকে বন্ধুকে মারধর করার ১০ মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। সেই ভিডিও ফুটেজের খলনায়ক ছিলেন জুনায়েদ আল ইমদাদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যায়, এক কিশোরীকে কেন্দ্র করে নুরুল্লাহ নামের এক যুবককে মারধর করছেন জুনায়েদ। অন্য একজন ধারণ করছেন সেই ভিডিও। এরপর সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনায় নুরুল্লাহ মামলা করেন জুনায়েদের বিরুদ্ধে। মামলা হওয়ার পর ঘটনার ৭ দিনের মাথায় ২০ মার্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন জুনায়েদ। ততদিনে তিনি হয়ে গেলেন ‘আমি জুনায়েদ’। এরপর ১২২ দিন জেল খেটেছেন তিনি। এখন রয়েছেন জামিন অবস্থায়।

junaed

২০১৬ সালের ১৩ মার্চ ধানমন্ডি লেকের সকালের সেই ঘটনার জন্য তিনি আজ অনুতপ্ত। সেদিন কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমি তখন মাদকাসক্ত ছিলাম। মাদক আমাকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিলো। সঙ্গদোষেই আমি খারাপ পথে চলে গিয়েছিলাম।’

২০১৩ সালে এসএসসি পাসের পর থেকে তিনি মাদক গ্রহণ শুরু করেন। কিন্তু এখন আর মাদকাসক্ত নন তিনি। শুরু করেছেন পড়ালেখাও। নিজেকে নিয়োজিত করেছেন সমাজসেবামূলক কাজে। প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আলোর পরশ’ নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন।

কেন এই পরিবর্তন এমন প্রশ্নে জুনায়েদ বলেন, ‘আত্মোপলব্ধির কারণে আমার এই পরিবর্তন। ১২২ দিন জেলে থাকার পর আমি এখন গৃহকারাগারে বন্দি প্রায়। মাদক ছেড়ে দিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছি। একটা ডিপ্লোমা কোর্স করছি, এরপরেই ভার্সিটিতে ভর্তি হবো। এরপর যেটুকু সময় থাকে; সেটুকু সময় আমি আলোর পরশ নামের একটি স্কুলে ব্যয় করি। বস্তির কিছু বাচ্চাকে পড়ালেখা করাই।’

junaed

যাত্রাবাড়ী এলাকার এই স্কুলে অন্যান্য স্কুলে ভর্তি হতে প্রস্তুতি হিসেবে লেখাপড়া শেখানো হয়। সেই স্কুল থেকে যদি কোনো সুবিধাবঞ্চিত শিশু ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, তবে আলোর পরশ সংগঠন থেকে তিনি তাদের পড়ালেখার দায়িত্ব নিবেন। এই স্কুলে শিক্ষাদান ছাড়াও অন্যান্য সমাজসেবামূলক কাজেও যুক্ত হয়েছেন জুনায়েদ।

জুনায়েদ এখন উপলব্ধি করেন, মাদক শুধু একটি ছেলে বা মেয়েকে নয়- একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। তাই তিনি মাদকাসক্তদের আহ্বান জানিয়েছেন মাদক ছেড়ে আলোর পথে আসার।

Featured