বাতিল করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া। ডিএসসিসির পাঁচটি পদে ৯৫ জন জনবল নিয়োগের জন্য দুই ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্নের পর ফল ঘোষণার আগেই তা বাতিল করা হলো। নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ার কারণ দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, ডিএসসিসিতে প্রশাসক ও নির্বাচিত মেয়রের আমলে দুই ধাপে পাঁচটি পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল সংস্থাটি। এতে ৯৫ জন জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে নিয়ম-নীতি অনুযায়ী কয়েক ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। নিয়োগ কার্যক্রমের সব কাজ শেষ করে শুধু ফলাফল ঘোষণা বাকি ছিল।
কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগেই গত বুধবার এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। জনবল নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এটি বাতিল করা হয়েছে বলে এ সংক্রান্ত রেজুলেশনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালের অক্টোবরে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল ডিএসসিসি। পরে ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণদের ওই বছরের মে মাসে কয়েক ধাপে কম্পিউটার লিটারেসি পরীক্ষা নেয়া হয়। এরপর উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের একই মাসে পাঁচটি বোর্ডের মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষাও নেয়া হয়। বাকি ছিল শুধু ফলাফল ঘোষণা। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়ও বেঁধে দেয়া হয়। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ফল ঘোষণা করেনি ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।
সূত্র আরও জানায়, মেয়র হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন দায়িত্ব নেয়ার আগেই নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু সেসময় তা সম্পন্ন করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। পরে মেয়র হিসেবে সাঈদ খোকন দায়িত্ব নেয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে আবার দরখাস্ত আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ নিয়োগের তালিকায় পছন্দের ব্যক্তিরা না থাকায় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তা ও দলীয় নেতাকর্মীরা মেয়রের কাছে তদবির শুরু করে। ফলে বেকায়দায় পড়েন মেয়র। এরপর আর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়নি।
এদিকে, ডিএসসিসির একটি সূত্র জানায়, মন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদবিরের কারণে মেয়র ‘কোটা’ রেখে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করতে চেয়েছিল কর্পোরেশন। কিন্তু সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো নিয়োগে অনিয়মের পক্ষে ছিলেন না। এতে করে শেষ পর্যন্ত ফল ঘোষণা আটকে যায়। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয় কর্পোরেশন।
অন্যদিকে, নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের খবরে চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘সচিবের সঙ্গে কথা বলেন।’
জানতে চাইলে সচিব খান মোহাম্মদ রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন,‘নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে।’