আমেরিকায় প্রতি বছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ (ধন্যবাদ দেওয়ার দিন) হিসেবে উদযাপিত হয়।
এছাড়াও কানাডায় অক্টোবরের দ্বিতীয় সোমবার, গ্রানাডায় ২৫ অক্টোবর, লাইবেরিয়ায় নভেম্বরের প্রথম বৃহস্পতিবার, নেদারল্যান্ডসে চতুর্থ বৃহস্পতিবার, নরফোকল্যান্ডে আমেরিকান থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’র আগের দিন অথবা ৬ দিন পর এ দিবসটি পালিত হয়।
থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’কে আমেরিকানরা ‘দ্য টার্কি ডে’-ও বলে। কারণ এ দিনে সব খাবারেই থাকে টার্কির (বনমোরগ জাতীয় পাখি) আধিপত্য। খাবারের প্লেটে বিশাল আকৃতির টার্কি থেকে শুরু করে টেবিল ক্লথ, গ্লাস, বাটি, ন্যাপকিন এমনকি পোশাকেও থাকে টার্কির ছবি। এই একমাস সব কিছুতেই শুধু টার্কি।
দিনটি আমেরিকানরা পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব মিলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, গল্পগুজব, নানা আনন্দ-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দেয়।
এদিন অনেকে আবার খাবার-দাবার ভলান্টিয়ারিং করে, কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান নিম্নবিত্তদের ফ্রি ডিনার করায়। তারা চায় কেউ যেন থ্যাঙ্কস গিভিং থেকে বঞ্চিত না হয়।
আমেরিকার সব প্রতিষ্ঠান, অফিস, স্কুল-কলেজ, হোটেল, রেস্টুরেন্টে টানা চার-পাঁচ দিনের ছুটি থাকে বলে অনেকেই দূরে কোথাও ঘুরতে চলে যায়। তবে যেখানেই যাক, টার্কি কিন্তু চাই।
‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’র ইতিহাস থেকে জানা যায়, এর শুরুটা করেছিলেন কানাডিয়ান অভিযানকারী মার্টিন ফ্রোবিশার ১৫৭৮ সালে। সে সময় তিনি এক দুঃসাহসিক সমুদ্র অভিযানের শেষে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য এক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। সেই থেকে কানাডায় ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ পালিত হয়ে আসছে।
আর আমেরিকায় ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ প্রচলন শুরু হয় ১৬২১ সালের নভেম্বরে। ওই সময় কর্নের ফলন ভালো হওয়ায় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে আমেরিকানরা এক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। ১৮১৭ সালে নিউইয়র্কে সর্ব প্রথম এ দিবসটি উপলক্ষ্যে সরকারিভাবে ছুটির দিন হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরে ১৮৬৩ সালে আব্রাহাম লিংকন নভেম্বরের শেষ বৃহস্পতিবারকে ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা দেন। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত এভাবেই পালিত হয় দিবসটি। কিন্তু ১৯৩৯ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন রুজভেল্ট তখনকার অর্থনৈতিক মন্দা (গ্রেট ডিপরেশন) কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে রিটেল সেল বাড়ানোর জন্য এ ছুটি এক সপ্তাহ এগিয়ে আনার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ পালিত হয়ে আসছে।