মাত্র কিছুদিন আগেই দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে। এর আগে মালয়েশিয়ার এমডিবি ফান্ডের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশেই দুর্নীতি ও ঘুষ আদান প্রদানের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে।
সম্প্রতি দুর্নীতি বিষয়ে ১৮ মাস দীর্ঘ একটি সার্ভে পরিচালনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। দুর্নীতি নিয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের ১৬টি দেশের প্রায় ২০ হাজার মানুষের সঙ্গে আলাপ করেছে সংস্থাটি। আলাপে দুর্নীতির বিভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রায় প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজনকেই সরকারি চাকরি বা সেবা পেতে ঘুষ দিতে হয়।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘুষ আদান-প্রদানে শীর্ষে রয়েছে এশিয়ার পাঁচ দুর্নীতিপ্রবণ দেশ। ঘুষ দেয়া-নেয়ায় গোটা এশিয়ায় সবার ওপরে অবস্থান করছে ভারত। সবথেকে বেশি ঘুষ লেনদেন হয় এ দেশেই। প্রতি ১০ জন নাগরিকের ৭ জনকেই কোনো না কোনো কারণে ঘুষ দিতে হয়।
সম্প্রতি ১৬টি এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ঘুষ চাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি ভারতে। জন্ম থেকে মৃত্যু, স্কুল বা হাসপাতালে ভর্তি, সরকারি দপ্তর, পুলিশ বা আদালতে কোনো কাজ করাতে গেলে ঘুষ দিতেই হয়।
ভারতের পরেই রয়েছে ভিয়েতনাম। সেখানে ৬৫ ভাগ মানুষের ঘুষ দেওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে। দেশটির ৬০ ভাগ মানুষেই মনে করেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার কোনো ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না।
তালিকার তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড। সেখানে প্রায় ৪১ ভাগ মানুষের ঘুষ দেয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশটি প্রায় প্রতিটি সেক্টরই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। দেশটির ১৪ ভাগ মানুষ মনে করেন গত এক বছরে দেশে দর্নীতির পরিমান বেড়েছে। আর প্রায় ৭২ ভাগ মানুষ মনে করেন সরকার খুব ভালোভাবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছে।
থাইল্যান্ডের পরই দুর্নীতি প্রবণ দেশের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। দেশটিতে প্রায় ৪০ ভাগ মানুষই ঘুষ আদান প্রদানের সঙ্গে জড়িত। দেশটির প্রায় চার ভাগের তিনভাগ পুলিশ কর্মকর্তাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দেশের প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে সাতজনকেই কোনো না কোনো কাজে ঘুষ দিতে হয়।
দুর্নীতিতে পাকিস্তানের পরেই রয়েছে মিয়ানমার। দেশের মানুষ মনে করেন অর্ধেক বা সব পুলিশ সদস্যই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। অপরদিকে, ৪০ ভাগ মানুষ মনে করেন দেশের বিচারপতিরা চরমভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত।