অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো রেল যোগাযোগের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বর্তমান সরকার। এ উদ্দেশে ইতোমধ্যে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রেল কোচ আমদানি করা হয়েছে। এছাড়া সংগ্রহ করা হচ্ছে ব্রড ও মিটার গেজ রেল ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ)।
রেলখাতের উন্নয়নের অংশ হিসেবে এবার জনবল সংকটে বন্ধ হয়ে যাওয়া রেল স্টেশনগুলো আবারও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রথম দফায় আজ (বৃহস্পতিবার) এরকম ৬০টি বন্ধ থাকা স্টেশন একসঙ্গে চালু হচ্ছে।
দুপুর ১টায় ঘোড়াশাল স্টেশনে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফিরোজ সালাহ উদ্দিন।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান জানান, বন্ধ স্টেশনগুলোতে ট্রেন চলাচল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। নির্ধারিত গতিবেগে সেখানে ট্রেন চলতে পারে না। ট্রেন পরিচালনায় নানা অসুবিধা হয়। স্টেশনগুলো চালু হলে এসব অসুবিধা দূর হবে, ট্রেনের গতিবেগও বাড়বে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ট্রেনের সঙ্গে রেল স্টেশনও বন্ধের হিড়িক পড়ে। জোট সরকারের আমলে পূর্বাঞ্চলের ৪৪টি এবং পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে পূর্বাঞ্চলে বন্ধ হয়ে যায় আরও ১২টি স্টেশন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অবসরে যাওয়া কিছু স্টেশন মাস্টারকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে বন্ধ হওয়া ২০টি স্টেশন চালু করে। এরপরও পশ্চিমাঞ্চলে রেলেওয়ের লালমনিরহাট বিভাগে ৫৯টির মধ্যে ১৬টি ও পাকশী বিভাগে ১১৪টির মধ্যে ৩৪টি স্টেশন বন্ধ থাকে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত এক যুগে বাংলাদেশে রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ছোট-বড় প্রায় ১৮৮টি স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। রেলওয়েতে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে রেল বিভাগ বিভিন্ন সময়ে এসব স্টেশন বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ৬০ ও পশ্চিমাঞ্চলে ১২৮টি স্টেশন বন্ধ রয়েছে। আর বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গত কয়েক বছরে এসব স্টেশনের মূল্যবান জিনিসপত্রও হারিয়ে যায়। চুরি হয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ এসব স্টেশন চালু করার উদ্যোগ নেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বন্ধ হয়ে যাওয়া স্টেশনগুলোর মধ্যে প্রথম দফায় ঢাকা বিভাগে ২১টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২টি, পাকশীতে ২৩টি ও লালমনিরহাটের ৪টি স্টেশন চালু করা হচ্ছে।