ট্রাম্পের ভ্রমণ সম্পর্কিত সর্বশেষ নির্বাহী আদেশটিও আদালতে স্থগিত

ট্রাম্পের ভ্রমণ সম্পর্কিত সর্বশেষ নির্বাহী আদেশটিও আদালতে স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল আদালত বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ সম্পর্কিত সর্বশেষ নির্বাহী আদেশের কার্যকারিতার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
কার্যকর হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা-সংক্রান্ত প্রেসিডেন্টের সর্বশেষ এই আদেশ স্থগিত করা হলো। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এ আদেশ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
হাওয়াই রাজ্যের ইউএস ডিসট্রিক্ট জজ ডেরিক ওয়াটসন তার রায়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশের কার্যকারিতা অবিলম্বে স্থগিত রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের এ নির্দেশ শুধু হাওয়াই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সব সীমান্ত বন্দরের জন্য কার্যকর বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। আদালতের দীর্ঘ রায়ে বলা হয়েছে বিশেষ ধর্ম ও দেশকে লক্ষ্য করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি মার্কিন সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী। হাওয়াই রাজ্যের এ আদালতে নির্বাহী আদেশের ফলে রাজ্যের পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, নাগরিকদের পরিবারের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বাড়বে বলে যুক্তি তুলে ধরা হয়। হাওয়াই ছাড়া আরও দুইটি রাজ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে গত বুধবার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়াশিংটন ও ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের ইউএস ডিসট্রিক্ট কোর্টের নির্দেশ আসার আগেই বিচারক ডেরিক ওয়াটসনের আদেশে স্থগিত হয়ে গেল মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভ্রমণ সংক্রান্ত দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশ।
এদিকে রায় আসার পরপরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাশভিল নগরে এক প্রচার সভায় আদালতের খবরদারির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশটি প্রথমটির চেয়ে কম মাত্রায় কড়াকড়ি ছিল। ট্রাম্প প্রচার সভায় তার বক্তব্যে বলেন, এ আদেশ জারির ক্ষেত্রে দেশের নিরাপত্তার জন্য সংবিধানে দেওয়া তার ক্ষমতাকে তিনি ব্যবহার করেছেন। দেশের জনগণের নিরাপত্তার জন্য তিনি লড়ে যাবেন বলেও সভায় উল্লেখ করেন।
এদিকে ভ্রমণসংক্রান্ত দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশ স্থগিত হওয়ায় উদারনৈতিক সংগঠনগুলো সন্তোষ প্রকাশ করেছে। নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে চেয়েছেন, তা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, প্রথম দফা নির্বাহী আদেশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাতটি মুসলমান দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়। বিষয়টি আদালতে গড়ালে প্রথম নির্বাহী আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত হয়ে পড়ে। সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফা একই বিষয় নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এ আদেশে আগের তালিকা থেকে ইরাক বাদ দিয়ে ছয়টি দেশের নাম রাখা হয়। ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন এবং সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দ্বিতীয় নির্বাহী আদেশে গ্রিন কার্ড ধারী এবং আগে ভিসা নেওয়া আছে এমন লোকজনকে নিষেধাজ্ঞা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী গ্রহণের বার্ষিক সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ দেশ এবং বিশেষ ধর্মকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা সংবিধান এবং আমেরিকার মূল চেতনার বিরোধী বলে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। অন্তত ছয়টি রাজ্যে এমন নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে আবারও মামলা করা হয়।

আন্তর্জাতিক