আপিল খারিজ : বাজেয়াপ্ত টাকা ফেরত দিতে হবে

আপিল খারিজ : বাজেয়াপ্ত টাকা ফেরত দিতে হবে

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে আদায় করা অর্থ ফেরতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আনা বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে আনা আপিল খারিজ (ডিসমিস্ড) করে আদেশ দেয়। গতকাল আপিল শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি রায়ের জন্য ধার্য ছিলো।
আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার এম আমীর-উল ইসলাম।
এডভোকেট আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট টাকা ফেরত দিতে রায় দেয়। এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আজ আপিল বিভাগ। ফলে টাকা ফেরতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ই বহাল রইল। তবে কত দিনের মধ্যে ওই অর্থ ফেরত দিতে হবে, সেটা আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে জানা যাবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েকশত কোটি টাকা আদায় করা হয়। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের সংরক্ষিত সরকারি কোষাগারে ওই টাকা জমা দেয়া হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসার পর ওই অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-কোম্পানি হাইকোর্টে পৃথক রিট আবেদন দাখিল করে। ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে রিট আবেদনকারী ব্যক্তি ও কোম্পানিকে ওই অর্থ ৯০ দিনের ভেতর ফেরত দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়ে রায় দেয় হাইকোর্ট।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক লিভ টু আপিল করে (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে)। এর ওপর শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ “লিভ টু আপিল” মঞ্জুর করে। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতাও স্থগিত করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে।
মামলার বিবরণী থেকে আরো জানা যায়, এস. আলম স্টিলস লিমিটেডকে ৬০ কোটি টাকা, দ্য কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড এবং বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেডকে ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার, মেঘনা সিমেন্ট মিলকে ৫২ কোটি, বসুন্ধরা পেপার মিলকে ১৫ কোটি, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডকে ৯০ লাখ, ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজকে ৭০ লাখ, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসকে ১৭ কোটি ৫৫ লাখ, ইউনিক ভকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. নূর আলীকে ৬৫ লাখ, বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডকে ৭ কোটি ১০ লাখ, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে ৩৫ কোটি এবং ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেড ডেভেলপমেন্টকে ১৮৯ কোটি টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটগুলো করা হয়েছিলো।
আপিলে গতকাল বিষয়টির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আইন আদালত