আগামী দশ মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মালয়েশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কোনো বিরোধ তৈরি হবে না।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে বুধবার রাতে ঢাকায় ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের একথা বলেন যোগাযোগমন্ত্রী।
সেতু নির্মাণে জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে শিগগিরই মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নির্মাণচুক্তি স্বাক্ষর করা হবে বলেও তিনি জানান।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বৃহস্পতিবার সকালে এতথ্য জানান।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “বিশ্বব্যাংক শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। দেশের ছোট-বড় প্রায় ত্রিশটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন চলমান।“
তিনি বলেন, “সরকারের হাতে সময় কম। বিশ্বব্যাংক দেরি করায় সরকার বিকল্প অর্থায়নে মালয়েশিয়ার সঙ্গে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।“
যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, স্মারক অনুযায়ী বিওওটি-ভিত্তিতে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। মালয়েশীয় সরকারের নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে সেতু নির্মাণে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা হবে।
এছাড়া সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে কোনো সমস্যা নেই বলে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ অবহিত করেছে বলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান।
মন্ত্রী বলেন, সমঝোতা স্মারকটি দু’দেশের সম্পর্ক প্রসারে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ২ লাখ ৬৭ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশিকে বৈধ করার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে এনেছে বাংলাদেশ সরকার।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের লক্ষ্যে যোগাযোগমন্ত্রীর নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়া যান। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদ, সেতু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম।
গত মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে পদ্মা সেতু ও সম্পর্কিত সুবিধাদিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ বিষয়ে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং মালয়েশীয় সরকারের দক্ষিণ এশিয়ার অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষ দূত দাতো সেরি সামি ভেলু চুক্তিতে নিজ নিজ দেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব তুন রাজাক। অনুষ্ঠানস্থল থেকেই মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন।