ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) উত্তর ও দক্ষিণের নির্বাচনে এ মুহুর্তে মেয়র পদে কাউকে সমর্থন দিচ্ছে না ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ।
তবে পরবর্তীতে সমর্থনের বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করা হবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ইস্যুতে বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে দলের ঢাকার এমপিদের নিয়ে এক বৈঠকের পর সৈয়দ আশরাফ ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটি একটি অরাজনৈতিক নির্বাচন। এ নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে পরোক্ষভাবে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আমরা এখনই কাউকে সমর্থন দেইনি। সময় হলে এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা যাবে।’
তবে এর আগে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটসহ সব সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানান সৈয়দ আশরাফ।
বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের প্রত্যাশা করে আশরাফ বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিলল্লায় সফলভাবে ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে ঢাকা সিটি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে পারে। এটা করলে ভালো হবে। সময় কম লাগবে।
বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ঢাকা সিটি নির্বাচনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে। এই নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নের সুযোগ নেই। চাইলে কাউকে সমর্থন দিতে পারে। আর সমর্থনের সুযোগ থাকলেও তা পরোক্ষভাবে। কারণ প্রত্যক্ষ সমর্থন প্রার্থিতা মনোনয়নের শামিল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সমর্থন দেওয়া না দেওয়ার বিষয়ে এখনও সময় আছে। সময় হলে এটার বিষয়ে তখন চিন্তা-ভাবনা করবো।
আশরাফ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (বর্তমানে তুরস্ক সফরে আছেন) দেশে ফিরলে তাদের দলের সংসদীয় বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে ঢাকা সিটি করপোরশন নির্বাচনের বিষয়ে কোনো পরামর্শ থাকলে দেওয়া হবে। যদিও বোর্ডের প্রার্থিতা মনোনয়নের কোনো অধিকার নেই।
আগামী ২৪ মে অনুষ্ঠেয় ঢাকা সিটি নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলে ভোটারদের প্রার্থী পছন্দের সুযোগ থাকে। আশা করি বিপুল সংখ্যক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর অংশগ্রহণে এই নির্বাচন হবে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্থানীয় ইস্যুভিত্তিক হওয়া উচিত মন্তব্য বরে তিনি বলেন, আশা করি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীরা স্থানীয় ইস্যু সামনে আনবে। এই নির্বাচনে জাতীয় ইস্যু নিয়ে আশা করা বোকামি হবে।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বেগম মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরুল¬াহ, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন নুর-উল আলম লেনিন, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, বিএম মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মৃনাল কান্তি দাশ, অসীম কুমার উকিল, এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ ঢাকা সিটির আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা অংশ নেন।