দুটি নতুন ডুবোজাহাজ বহরে যোগ করার মধ্যদিয়ে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যাত্রা শুরু হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে চট্টগ্রাম নৌ-জেটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘নবযাত্রা’ এবং ‘জয়যাত্রা’ নামে ডুবোজাহাজ দুটিকে কমিশনিং প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ডুবোজাহাজ দুটির কমান্ডিং অফিসারদ্বয়ের হাতে আনুষ্ঠানিক কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন এবং কমিশনিংয়ের আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে চীন থেকে ক্রয় করা ডুবোজাহাজ দুটির নামফলক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রদত্ত ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ দুটি সাবমেরিন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়ায় এই বাহিনী এখন থেকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো।’
তিনি বলেন, বিশ্বের মাত্র গুটিকতক দেশ সাবমেরিন পরিচালনা করে থাকে। সেই তালিকায় আজ থেকে বাংলাদেশের নাম স্থান পাবে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার একটি বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নতুন কমিশনকৃত সাবমেরিন দুটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং কোন সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী পরে ত্রিমাত্রিক ফোর্স হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিএনএস বঙ্গবন্ধু এবং নৌ-কমান্ডোদের একটি মহড়াও প্রত্যক্ষ করেন। দুটি হেলিকপ্টার এবং দুটি এমপিএ বিমানও মহড়ায় অংশগ্রহণ করে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় সাবমেরিন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় সহায়তার জন্য স্থাপনার উদ্বোধন এবং বিএনএস শেখ হাসিনা নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর ওপর একটি প্রামান্য চিত্রপ্রদর্শন এবং দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, কূটনীতিক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চীনের বন্দর থেকে সাবমেরিন দুটি গত ২২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে আসে এবং ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হয়।
দালিয়ান শহরের লিয়াওনিং প্রদেশের শিপইয়ার্ডে এক অনুষ্ঠানে চীন সরকারের পক্ষে রিয়ার এডমিরাল লিউ জিজো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহমেদের কাছে ডুবোজাহাজ দুটি হস্তান্তর করেন।
ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন দুটি ৭৬ সে.মি. লম্বা এবং ৭ দশমিক ৬ মিটার প্রশস্ত এবং অত্যাধুনিক টর্পেডো ও মাইন সজ্জিত। সাবমেরিন দুটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল এবং এর ওজন ১ হাজার ৬০৯ টন।
আইএসপিআর জানায়, সাবমেরিন দুটি পরিচালনার জন্য দুই দেশের নৌবাহিনীর সদস্যদের ট্রায়াল এবং প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে।