বাংলাদেশে এ যাবৎকালে নির্মিত জাহাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও উচ্চ গতিসম্পন্ন জাহাজ ‘এনজিয়ান’ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১১০ দশমিক ৯০ মিটার, প্রস্থ ১৬ দশমিক ৫০ মিটার, গভীরতা ৮ দশমিক ২০ মিটার। জাহাজটির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৪১০০ হর্স পাওয়ার। গতি ১২ দশমিক ৫০ নটিক্যাল মাইল ও ধারণক্ষমতা ৬১০০ মেট্রিক টন।
জাহাজটি মূল্য ধরা ১০০ কোটি টাকা।
‘এনজিয়ান’ নির্মাণ করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা ঘাট এলাকায় অবস্থিত আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড সিøপওয়েজ লিমিটেড।
বুধবার দুপুরে শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে জার্মান ক্রেতা প্রতিষ্ঠান জার্মান কমরোসকি মারিটিম জিএমবিএইচ-এর প্রতিনিধির কাছে জাহাজটি হস্তান্তর করা হয়।
হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জার্মান রাষ্ট্রদূত হোলগার মাইকেল, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম, বিটিভির মহাপরিচালক ম হামিদ, ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কমরোসকি মারিটিম জিএমবিএইচ’র প্রতিনিধি উইলফ্রেড মুলার, জিএল বাংলাদেশ’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদ করিম, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনোজ কান্তি বড়াল, পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম, আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্ল¬াহেল বারী, ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আফরুজা বারী প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেন, “কিছুদিন আগেও আমাদের দর্জির জাতি হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে দিন অনেক বদলে গেছে। এখন আর আগের বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। এখন এদেশেই আর্ন্তজাতিক মানের জাহাজ তৈরি হচ্ছে। আমরা প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত হচ্ছি। বহির্বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।”
বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে ইনসেনটিভ বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। এছাড়া শিপবিল্ডিঙের একটি ফোরশোর নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে আলোচনা করে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ বারী বলেন, “ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় জার্মানির কমরোসকি মারিটিম জিএমবিএইচ’র জন্য জাহাজটি জিএলই তিন আইস ক্লাস মোতাবেক জিব্রাল্টার ফ্ল্যাগ বহনকারী হিসেবে নির্মিত।”
তিনি আরও বলেন, “আনন্দ শিপইয়ার্ড অ্যান্ড সিøপওয়েজ লিমিটেড ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে সোনারগাঁওয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় আর্ন্তজাতিকমানের জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”
প্রসঙ্গত, আনন্দ শিপইয়ার্ড এ পর্যন্ত ৩১৫টি জলযান নির্মাণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে ‘স্টেলা মেরিস’ নামে জাহাজ রপ্তানির মধ্য দিয়ে জাহাজ রপ্তানির দেশ হিসেবে বাংলাদেশেকে বিশ্ব বাজারে পরিচিত করে।
প্রতিষ্ঠানটি ডেনমার্ক, জার্মান, নরওয়ে ও মোজাম্বিকসহ বিভিন্ন দেশে জাহাজ রপ্তানি করে।
বর্তমানে আনন্দ শিপইয়ার্ডে একসঙ্গে ৮টি দশ হাজার ডিডব্লিউটি আকৃতির জাহাজ নির্মাণের কাজ চলছে।