সীমার ১৫ লাখ, সাক্কুরও ১৫ লাখ

সীমার ১৫ লাখ, সাক্কুরও ১৫ লাখ

স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরের নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের খরচের বিবরণী নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন কিংবা গুঞ্জণ উঠার খবর পুরনো। তাই ইসির বিধান মেনেই প্রার্থীদের হলফনামায় সম্ভাব্য খরচ ও অর্থ প্রাপ্তির উৎস ঘোষণা করতে হয়।

ব্যতিক্রম হয়নি কুমিল্লা সিটির দ্বিতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। তাই ইসির বেধে দেয়া ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে অংশ নেয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু নির্বাচনী হলফনামায় ১৫ লাখ টাকা করে খরচ করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু হলফনামায় উল্লেখ করা সেই ১৫ লাখ টাকার পুরোটাও তাদের নিকট নেই। তাই নির্বাচনী খরচ মেটাতে আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা নিতে হচ্ছে।

সীমার কাছে ৫ লাখ টাকা থাকলেও অবশিষ্ট ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন মা ও স্বামীর কাছ থেকে। অপরদিকে মনিরুল হক সাক্কুর কাছে ১২ লাখ টাকা থাকলেও ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন তার আইনজীবী ভাইয়ের কাছ থেকে। অপর জেএসডির শিরিন আক্তার ব্যয় করবেন দুই লাখ টাকা।

নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া তিন মেয়র প্রার্থীর হলফনামা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সীমার হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সীমা নির্বাচনী ১৫ লাখ টাকা খরচের জন্য নিজ আয় থেকে অর্থ নির্ধারণ করেছেন ৫ লাখ টাকা। অবশিষ্ট টাকা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অনুদান হিসেবে মা নার্গিস সুলতানা এবং ব্যবসায়ী স্বামী নিসার উদ্দিনের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন।

খরচের তালিকার প্রথম ভাগে ছবি বা প্রতীক তৈরিতে ৯ হাজার ৫০০, ১৪ দিন যাবৎ অফিস আপ্যায়নে ২১ হাজার, সীমার ১২০ জন কর্মীর প্রতিদিন ২০০ টাকা করে খরচ করবেন ৩ লাখ ৩৬ হাজার, বিবিধ খরচ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

হলফনামায় খরচের তালিকার দ্বিতীয় অংশে ৯,০০০ পোস্টার ৩ লাখ ৫০ হাজার, দুইটি নির্বাচনী ক্যাম্প/ অফিস তৈরি/শ্রমিক খরচ/কর্মীদের মোট খরচ ১লাখ ২০ হাজার টাকা।

কেন্দ্রীয় অফিস/ক্যাম্প স্থাপনসহ কর্মীদের খরচ ১লাখ ৪০ হাজার, সীমা ও তার এজেন্ট/কর্মীদের যাতায়াত খরচ ৪০ হাজার টাকা, সভা/ঘরোয়া বৈঠকের জন্য আসবাবপত্রসহ অন্যান্য খরচ ২০ হাজার, ১ লাখ কপি লিফলেট ছাপা ৫০ হাজার, হ্যান্ডবিল ১ লাখ ২০ হাজার, ১০০টি ডিজিটাল ব্যানার তৈরি/টানানো খরচ ৫৭ হাজার, ২৭টি পথসভা ১৩ হাজার ৫০০ এবং মাইকিং/ভাড়া ও পারিশ্রমিক বাবদ খরচ ৫০ হাজার টাকা।

এদিকে, বিএনপির মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুও ১৫ লাখ টাকা খরচের হলফনামা দিয়েছেন। সীমার সঙ্গে সাক্কুর ব্যয়ের অর্থের পরিমাণ ঠিক থাকলেও খরচের তালিকায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। মনিরুল হক সাক্কু তার নির্বাচনী ১৫ লাখ টাকা খরচের জন্য নিজ আয় থেকে অর্থ নির্ধারণ করেছেন ১২ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৩ লাখ টাকা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত অনুদান হিসেবে তার আইনজীবী ভাই কাইমুল হক রিংকুর কাছ থেকে নিয়েছেন।

খরচের তালিকায় পোস্টার ১ লাখ ৮৭ হাজার, দুইটি নির্বাচনী ক্যাম্প/অফিস স্থাপন/কর্মীদের খরচ এবং কেন্দ্রীয় ক্যাম্প/অফিসের খরচ ৩০ হাজার টাকা, সাক্কুর ও তার এজেন্ট/কর্মীদের যাতায়াত ৩০ হাজার টাকা, ঘরোয়া বৈঠক/সভার আয়োজন, শ্রমিক পারিশ্রমিক ও আসবাবপত্র খরচ রেখেছেন ৭৫ হাজার, ৭৫ হাজার লিফলট ৭৫ হাজার টাকা, ৭৫ হাজার হ্যান্ডবিল ৭৫ হাজার, ১৫০ ব্যনার তৈরি ও টানানো ৬০ হাজার, ১২০টি ডিজিটাল ব্যানার তৈরি ও টানানো ৮৪ হাজার টাকা, ২৫টি পথসভা ৩১ হাজার, মাইকিং, ভাড়া ও পারিশ্রমিক ৩ লাখ ৫১ হাজার, ১০০ টি ছবি ও প্রতীক খরচ ১০ হাজার, ২টি অফিসে প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার করে ১৩ দিনে আপ্যায়ন ৪৫ হাজার টাকা, সাক্কুর ১৩৫ জন কর্মীর প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে আপ্যায়ন মোট খরচ ৪ লাখ ৫ হাজার এবং বিবিধ খরচ নির্ধারণ করেছেন ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা।

অন্যদিকে, জেএসডির শিরিন আক্তার খরচের ঘোষণা দিয়েছেন মাত্র দুই লাখ টাকা। তাও তার নিজের কোনো অর্থ নেই। নির্বাচনের খরচ মেটাতে চাচা গোলাম মোস্তফার নিকট থেকে ৫০ হাজার ধার-কর্জ এবং অপর এক লাখ টাকা ব্যবসায়ী বোনের জামাই শফিকুর রহমানের কাছ থেকে এক লাখ এবং তার দল জেএসডি থেকে চাঁদা হিসেবে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। তার খরচের ফর্দটাও অপর দুই মেয়র  প্রার্থীর তালিকায় ছোট।

জেলা সংবাদ