অলৌকিক, দুর্বার ও অবিস্মরণীয় এক রূপকথা জন্ম দিলো মেসি-নেইমারের বার্সেলোনা। আর শুধু রুপকথাই নয় ঘরের মাঠে পিএসজিকে ৬-১ গোলে হারিয়ে তৈরি করলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জয়ের নতুন ইতিহাসও। যে ইতিহাসের উপর ভর করে শেষ আটে জায়গা করে নিলো মেসি-নেইমারদের বার্সেলোনা।
শেষ চার বছরে দুইবার বার্সার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেয়া পিএসজি ঘরের মাঠে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ৪-০ গোলের জয়ে প্রতিশোধের ভালো একটা মঞ্চ তৈরি করেছিল। তবে ভাগ্যদেবী তাদের সঙ্গে ছিল না। ঘরের মাঠে অসাধ্য সাধন করে আবারো পিএসজিকে ছিটকে দিল কাতালান শিবির।
অসাধ্য সাধনের শুরুটা হয় সুয়ারেজের হাত ধরে। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডি-বক্সে পিএসজির ডিফেন্ডাররা বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে হেড করেন সুয়ারেস। পা বাড়িয়ে ফেরান মুনিয়ে। কিন্তু গোললাইন প্রযুক্তিতে দেখা যায়, বল আগেই গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের ১৭ মিনিটে নেইমারের শট গোলপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে হতাশ হয় স্বাগতিক শিবির।
ম্যাচের ৪০ মিনিটে নিজেদের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে পিএসজি। বাঁ-দিক থেকে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা গোলমুখে বাড়ানো বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই ঠেলে দেন ফরাসি ডিফেন্ডার লেইভিন।
বিরতি থেকে ফিরেই আবারো গোলের দেখা পায় বার্সা। ম্যাচের ৫০ মিনিটে লেইভিন নিজেদের ডি-বক্সে নেইমারকে ফেলে দিলে পেনাল্টিটি পায় বার্সেলোনা। আর তা থেকে গোল করে দলকে স্বপ্ন ছোঁয়ার আরেকধাপ কাছে নিয়ে যান মেসি। এক মিনিট পরই সুযোগ পেয়েছিল সফরকারীরা। তবে কাভানির শট পোষ্টে লাগলে হতাশ হয় সফরকারী সমর্থকরা।
এর ঠিক ১০ মিনিট পর গোল করে স্বাগতক দর্শকদের স্তব্ধ করে দেন উরুগুয়ে তারকা কাভানি। ডি-বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। তবে ম্যাচের শেষ দুই মিনিটে দুই গোল করে বার্সাকে স্বপ্ন দেখান নেইমার। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে দারুণ এক বাঁকানো ফ্রি-কিকে লক্ষভেদের পর পেনাল্টি থেকে গোল করে স্কোরলাইন ৫-৫ করেন ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ড।
তবে অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থেকে সমতায় থেকেও শেষ আটের পথে ছিল পিএসজি। আর কোয়ার্টারে যেতে বার্সা দরকার ছিল আরও এক গোল। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখাও পেয়ে যায় মেসিরা। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে নেইমারের উঁচু করে বাড়ানো বল পা বাড়িয়ে জালে ঠেলে দেন বদলি হিসেবে নামা রবের্তো। আর বাকিটা ইতিহাস।
দিনের অন্য ম্যাচে পর্তুগালের দল বেনফিকাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে জার্মানির বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৪-১ গোলে। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল বেনফিকা।