প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার মিয়ানমারের শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে ইন্দোনেশীয় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’মিয়ানমারের শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা এবং এর সমাধান প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আইওআরএ লিডার্স সামিটের সাইড লাইনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একথা বলেন।
বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে এদুটি দেশ সফর করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়ক ইউনিটের প্রধান (সচিব) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) মো. খোরশেদ আলম ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আজ জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে আইওআরএ লিডার্স সামিটের সাইড লাইনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিয়ানমারের শরণার্থী সমস্যাটি আলোচিত হয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে মিয়ানমারের শরণার্থীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ভূমিকা নেয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি অনুরোধ জানান।
শহীদুল হক বলেন, রেল, ওষুধ শিল্প এবং জ্বালানি খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়েও দুই নেতার বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, তার দেশ রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে এবং বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ খাতে আরো সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ২৫০টি রেলের বগি সরবরাহ করায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে ব্যাপক উন্নয়নের খন্ড চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ এখন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোসহ বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
এ সময় ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যে ওষুধ শিল্পে যৌথ উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইন্দোনেশিয়া এলএনজি’র প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক উল্লেখ করে শহীদুল হক বলেন, দুই নেতার মধ্যে বৈঠকে এ ক্ষেত্রেও সম্ভাব্য পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে উইদোদো তা সাদরে গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে উইদোদো বলেন, তার সফরের বিষয়ে আলোচনা করতে আগামী দুই মাসের মধ্যে ইন্দোনেশীয় সরকারের একটি মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
এ বছরেই ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলেও এ সময় পররাষ্ট্র সচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং ইন্দোনেশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আজমল কবীর উপস্থিত ছিলেন।