অবশেষে লাহোরেই হচ্ছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনাল ম্যাচটি। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স এবং পেশোয়ার জালমি একে অপরের মোকাবেলা করবে আলোচিত ফাইনাল ম্যাচটিতে। চরম নিরাপত্তাঝুঁকি সত্তেও লাহোরের গাদ্দাফী স্টেডিয়ামে রোববার (৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে পিএসএলের ফাইনাল।
গত মাসেই পাকিস্তানজুড়ে সিরিজ বোমা হামলায় অন্তত ১৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। লাহোরেই গত মাসে দু’বার বোমা হামলা হয়েছে। দুই ঘটনআয় অন্তত ১৫জন মানুষ নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে লাহোরে যখন পিএসএলের ফাইনাল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখনই বেঁকে বসে বিদেশি ক্রিকেটাররা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কোনোভাবেই লাহোর গিয়ে খেলতে রাজি নয়।
ফাইনালে ওঠা কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিদেশি ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন, লুক রাইট, ডেভিড মালান জানিয়ে দিয়েছেন তারা লাহোর যাবেন না। অন্যদিকে পেশোয়ার জালমির বিদেশি ক্রিকেটাররা লাহোর যাবেন বলেই আশা করছেন দলটির মালিক জাভেদ আফ্রিদি।
যত নিরাপত্তা ঝুঁকিই থাকুক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড যে কোনো মূল্যেই হোক গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পিএসএল ফাইনাল আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর। ৫ মার্চ এই ফাইনাল উপলক্ষ্যে লাহোরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তারা। পাঞ্জাব রাজ্য এবং পাকিস্তান সরকারও যে কোনো মূল্যে এই ফাইনাল ম্যাচটি সফলভাবে আয়োজন করতে চায়।
এ কারণে দুই দল কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স, পেশোয়ার জালমির টিম বাস, হোটেল, যাতায়াতের রাস্তা এবং স্টেডিয়াম এলাকা সেনাবাহিনী দিয়ে ছেয়ে ফেলেছে। পাশাপাশি অস্ত্রসজ্জিত পুলিশ তো রয়েছেই। পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পাকিস্তান সরকার। স্টেডিয়ামের আশপাশে নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ গলে যেন একটি পিঁপড়াও প্রবেশ করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। থাকবে স্নাইপার ডগ স্কোয়াড, থাকছে মিলিটারি হলিকপ্টারের মহড়া এবং অনাকাংখিত ঘটনা এড়ানোর জন্য স্টেডিয়াম, হোটেল এবং বিমান বন্দরে অস্থায়ী হাসপাতাল।
গাদ্দাফি স্টেডিয়াম, টিম হোটেল এবং স্টেডিয়ামে যাতায়াতের রাস্তার পাশে সব দোকান এবং মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষের চলাচল সীমিত করে দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষনিক টহল এবং তল্লাসীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ নিরাপত্তার জন্য যত ধরনের ব্যাবস্থা নেয়া যায়, সবই নেয়া হয়েছে পিসিবির পক্ষ থেকে।
পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান বলেছেন, ‘২০০৯ সালে শ্রীলংকান ক্রিকেটারদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর এটাই হতে যাচ্ছে পাকিস্তানে সবচেয়ে বড় ক্রিকেটিং ইভেন্ট। একে যে কোনো মূল্যে সফল করতে চাই। তাহলেই পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দরজা উন্মুক্ত হয়ে যাবে।’
তবে সমালোচনাও আছে। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং তেহরিক-ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খান বলেছেন, ‘আমার চেয়ে পাকিস্তানে ক্রিকেট ফিরুক, এটা সম্ভবত আর বেশি কেউ চায় না। কিন্তু আল্লাহ না করুক, যদি অনাকাংখিত কিছু ঘটে যায় লাহোরের এই ফাইনাল ঘিরে, তাহলে আগামী কয়েক দশকেও আর পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানো যাবে না।’