ওয়াশিংটনে “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” র ৮ম আয়োজন

প্রিয়দেশ ডেস্ক: “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” নামক এই কবিতা উৎসবটি এবারে অষ্টম বারের মত অনুষ্ঠিত হয় ও প্রবাসের যান্ত্রিক এবং এক ঘেয়েমি জীবনে একটু ভিন্নতা আনতে শিল্পিত সৌরভে আন্দলিত হচ্ছে গ্রেটার ওয়াশিংটনের সাহিত্য রসিক প্রবাসী বাংগালীরা।

স্থানীয় সময় ২৫ শে ফেব্রূয়ারী শনিবার দিন বৃহত্তর ওয়াশিংটনের স্প্রিংফীল্ডেএই কবিতা উৎসবটি আয়োজন করে।

উপচে পরা হল রুমে শ্রোতাদের ব্যাপক উপস্থিতি ও শেষ পর্যন্ত উপভোগ করার জন্য উপস্থিত থাকা অনুষ্ঠানটির মান ও জনপ্রিয়তার প্রকাশ।

অনুষ্ঠান সূত্র জানায়, ২০১০ সালে কাব্যপ্রেমী দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘ্রিল ও ফারুখ আহমেদ দুজনে মিলে মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে ও শাঁখের ধ্বনিতে প্রথম “গানের ছোঁয়ায় কবিতা”র আগমনী আয়োজন করেন। সেদিন “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” র আঁতুড় ঘরে অন্যান্যদের মাঝে ছিলেন সরকার কবিরুদ্দিন, দিলারা হাশেম, আনিস আহমেদ, সন্তোষ বড়ুয়া, জসিম উদ্দিন (বর্তমানে গ্রীসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও তৎকালীন উপ-প্রধান বাংলাদেশ দুতাবাস ওয়াশিংটন ডিসি ), হুমায়রা হায়দার ও মেজর ফজলুর চৌধুরী।
সে কবিতা সন্ধ্যায় আলো আধারিতে গানের ছোঁয়া দিয়েছিলেন শারমিন জাহাঙ্গীর দিনার। সেই থেকে কবিতা ও গানের এই প্রেমের দুর্বার যাত্রা। তারই ধারাবাহিকতায় আজ “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” ষষ্ঠ বর্ষে প্রবেশ ও ৮ম আয়োজনের সফল সমাপ্তিতে পর্যভূষিত।

দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘ্রিল জানান, এবারের অনুষ্ঠান মালায় ছিল বরারবরের মতই প্রথমে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন ও শুধু কবিতার জন্য এই জন্ম, শুধু কবিতার জন্য কিছু খেলা, শুধু কবিতার জন্য একা হিম সন্ধ্যে বেলা । যা শুধু মাত্র সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা ও সমবেত গানের সমাবেশ।

মঙ্গল প্রদীপ হাতে নিয়ে এপর্বে অংশ গ্রহণ করেন মানাল আমিন, রুবা, ফারজান, সানিকা, আদৃতা ও অদিতি। সমবেত কণ্ঠে মেরিনা রহমান, দিনার মনি, ডরথী বোস, কামাল মুস্তফা, আদিতি সাদিয়া রহমান ও ডোরা গমেজ অংশ নেন। “শুধু কবিতার জন্য” কবিতাটি সরকার কবিরুদ্দিনের কন্ঠে বর্ষিত হয়। আলো আধারিতে এক কাব্যময় পরিবেশের সৃষ্টি হয় তখন।

মাতৃভাষার তরে যারা দিয়েছেন প্রাণ ৫২নের এই মা্সে, সেই মহান শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনে করে, মেরিনা রহমান, দিনারমনি, ডরথী বোস, কামাল মুস্তফা, আদিতি সাদিয়া রহমান ও ডোরা গমেজের সমবেত কন্ঠে গাওয়া হয় ।

“ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু ঝরা এ ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি”।

“গানের ছোঁয়ায় কবিতা” অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত সঞ্চালনায় প্রানবন্ত সঞ্চালনা করেন বিসিসিডিআই এর প্রাক্তন সভাপতি ও বাংলা স্কুলের বাংলার শিক্ষক আতিয়া মাহজাবীন নিতু।

“গানের ছোঁয়ায় কবিতা” র অষ্টম আয়োজনে কিছু কথা কিছু স্মৃতি তুলে ধরলেন ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার (রোকেয়া আপা)।

কবিতার বৃষ্টি নামে নতুন প্রজন্মের আরিয়ানা সানিকা রহমান কন্ঠে শান্তনু ব্যানার্জ্জীর বিদ্রুপ মুলক কবিতা “ বাংলাটা ঠিক আসেনা” পাঠের মধ্যদিয়ে।
প্রথম পর্বে কবিদের কবিতার আসর “কবিতা বেলা “অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন শফি দেলোয়ার কাজল, আসিফ এন্তাজ রবি,সামিনা আমিন,আহসান জামান, দস্তগীর জাহাঙ্গীর ও আনোয়ার ইকবাল কচি।
অনুষ্ঠানের মূল পর্ব “গানের ছোঁয়ায় কবিতায়” য় অংশগ্রহন করেন প্রতিষ্ঠিত আবৃত্তি ও গুনী কণ্ঠশিল্পীরা।

কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন আতিয়া মাহজাবীন নিতু শামিম চৌধুরী, ইকবাল বাহার চৌধুরী , কাফি খান অদিতি সাদিয়া রহমান, সরকার কবিরুদ্দিন, সাওকত খান দিপু ও ডঃ নাকিব ,সকলকে আমাদের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
কবিতার ও গানের মাঝে সম্পৃক্তির ছোঁয়ায় আনন্দলোকের আনন্দ নহর যারা বহিয়েছেন তারা হলেন এই অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত কণ্ঠশিল্পীগন ম্যরিনা রহমান, শারমীন জাহাংগীর দিনার ( দিনার মনি), ডরথী বোস রিমি, ও কামাল মুস্তফা।

কন্ঠে গানের সাথে সাথে তবলার তালের মুর্ছনায় আমাদের কণ্ঠশিল্পীদের কে সংগত করেছেন প্যাট্রীক গমেজ। সাথে কী বোর্ড বাজিয়েছেন হিরণ চৌধুরী। গিটারে ছিলেন ডেভিড রানা।

কবিদের কবিতার দ্বিতীয় আসর “কবিতা বেলা “অনুষ্ঠিত হয়। তাতে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মাহবুব হাসান সালেহ, ফাতিমা সিদ্দিকা, মোস্তফা তানিম, মিজানুর ভুঁইয়া ও সাইফুল ইসলাম।

তুগ্রীল আরো জানান, “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যানারটি বানিয়ে দিয়েছেন সাব্রিনা চৌধুরী ডনা। ধন্যবাদ পত্রের আর্ট ও আল্পনা দুটি একে দিয়েছেন সামিনা আমীন।ডিজিটাল কাজ সম্পাদনার দায়িত্তে ছিলেন আতিয়া মাহজাবিন নিতু। ফেইস বুকে ইভেন্ট পেইজ এর জন্য আর্টটি ব্যবহার করতে দেয়ায় নুহা তালুকদারকে অশেষ ধন্যবাদ জানানো হয়। সার্বিক ব্যবস্থাপনার সহযোগী ছিলেন জীবক কুমার বড়ুয়া সভাপতি আমরা বাঙ্গালী ফাউন্ডেশন, দেওয়ান আরশাদ আলী বিজয় সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিষয়ক পরিচালক আমরা বাঙ্গালী ফাউন্ডেশন, মিজানুর রহমান ভুইয়া প্রাক্তন সভাপতি বিসিসিডিআই ও বর্তমান কার্যকরি সদস্য -( বাই), মোস্তাফিজুর রহমান কার্যকরি পরিচালক আমরা বাঙ্গালী ফাউন্ডেশন ও মোঃ আলতাফ হোসেন, প্রচার ও গবেষণা বিষয়ক পরিচালক আমরা বাঙ্গালী ফাউন্ডেশন ও ওসমান খান পরিচালক আমরা বাঙ্গালী ফাউন্ডেশন। শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় ডঃ আরিফুর রহমান ও শব্দ নিয়ন্ত্রনে ছিলেন , মুস্তফা কামাল ও ডেভিড রানা ।

“ধ্রুপদ” “গানের ছোঁয়ায় কবিতা” র সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় সহযোগিতা করে।
প্রতিবারের মত এবারো আমাদের মিডিয়া পার্টনার ছিলেন নিউজ বাংলা।
মুমেন্টস ফটোগ্রাফীর রাজীব বড়ুয়া ধারন করেন সকল স্থির চিত্র।

তা ছাড়া বই মেলায় ২১শের বই মেলার আয়োজন করা হয়, বই মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মানাল আমিন ও আদ্রিতা ক্যাথেরিন জাহাঙ্গীর।
অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা পরিচালনা সহকারী ছিলেন সামিনা আমিন ও আতিয়া মাহজাবীন নিতু। ”
আগামীতে আবারো এমন এক্তি সুন্দর সন্ধ্যার প্রতিশ্রুতি ও রাতের খাবারের আয়োজনে শেষ হয় এবারের কাব্য বৃষ্টি স্নাত সুন্দর হিমেল সন্ধ্যা।

আয়োজকদের সুনিপুণ পরিকল্পনায় কোন বাহুল্যতা ছাড়া পিনপতন নীরবতায় কখন সময় গড়িয়ে শেষ হয়ে যায় এমন সুন্দর সন্ধ্যা, যখন তিন আয়োজক একত্রে উপস্থিত হয়ে বলে উঠেন শেষ হল আমাদের এবারের “গানের ছোঁয়ায় কবিতা”, শ্রোতাদের মনে হল
” শেষ হয়ে ও হইলনা শেষ।

গানের ছোঁয়ায় কবিতা অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনা করেন কবিতা কর্মী দস্তগীর জাহাঙ্গীর তুঘ্রিল।

অন্যান্য