দেশীয় অর্থনীতি সুসংহত করতে বিদেশি কর্মীদের ওপর করারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে সেদেশে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত বিদেশিরা নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, অর্থনৈতিক সমস্যা ও সৌদি নীতি-নির্ধারকরা সেদেশের নাগরিকদের চাকরির ব্যবস্থা করতে আগের নীতিতে পরিবর্তন আনছে। বিশ্বে অন্যান্য দেশের চেয়ে সবচেয়ে বেশি তেল রফতানি করে সৌদি আরব।
গত বছর দেশটি ‘ভিশন-২০৩০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে প্রাইভেট সেক্টরে আরো অধিক পরিমাণে সৌদি নাগরিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে বিনিয়োগ ও ব্যবসায় অর্থনৈতিক বৈচিত্রতার ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
২০১৪ সালে বিশ্ববাজারে তেলের দামে পতনের পর সৌদি আরবের বাজেটে ব্যাপক ঘাটতি দেখা যায়। এ ধাক্কা লাগে দেশটির প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। বেসরকারি সংস্থাগুলোর ঋণ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে; বিশেষ করে নির্মাণ খাতে।
সৌদি বিন লাদেন গ্রুপ দারিদ্র দেশগুলোর ৭০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। এছাড়া ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর হাজার হাজার শ্রমিক সৌদি ছাড়ছেন।
দেশটির সর্বশেষ প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ৯০ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রমিকরা নিজ দেশে ফিরছেন।
‘মানুষ সৌদি ছাড়ছে কারণ চুক্তি নবায়নের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কাজ নেই’- বলেন বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিক্রয়কারী এক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ১০ শতাংশ কমে গেছে।
তবে সৌদিতে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের জন্য আরো ভয়াবহ সময় ঘনিয়ে আসছে। আগামী জুলাইয়ে নতুন একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে সৌদি সরকার। স্বনির্ভর বিদেশি শ্রমিকদের ওপর করারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে মাসে ১০০ রিয়াল (২৭ ডলার) কর গুণতে হবে শ্রমিকদের। সরকারি ফান্ডে জমা হবে এই কর। যা আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বেড়ে ৪০০ রিয়ালে পৌঁছাবে।