মানিকগঞ্জ:
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ ৫ জন মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার মামলার রায়ে বাস চালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২টায় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মাহমুদ ফাইজুল কবীর এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় আসামি জামির হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি একেএম নুরুল হুদা রুবেল। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাধাব সাহা বলেন, ন্যায় বিচার পাইনি আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রামে কাগজের ফুল সিনেমার সুটিং স্পট দেখে তারেক মাসুদ, তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ ৯জন মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। পথে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোকা এলাকায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের (ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-০৩০২) সঙ্গে বিপরীতমুখী চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪২৮৮) সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ, মিশুক মুনিরসহ মাইক্রোবাস চালক মোস্তাফিজুর রহমান, প্রোডাকশন সহকারী মোতাহার হোসেন ওয়াসিম ও জামাল হোসেন নিহত হন।
এসময় গুরুতর আহত হন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, অধ্যাপক ঢালী আল-মামুন ও তাঁর স্ত্রী দিলারা বেগম জলি এবং তারেক মাসুদের সহকারী মনীশ রফিক।
এ ঘটনায় ঘিওর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ডিবি ইন্সপেক্টর আশরাফ-উল ইসলাম মামলার তদন্ত করে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের বাস চালক জামির হোসেনের বিরুদ্ধে ২৭৯,৩৩৭,৩৩৮(ক),৩০৪ ও ৪২৭ ধারায় আদালতে চার্জশিট দেন।
দুর্ঘটনার পরের দিন বাস চালককে মেহেরপুরে এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ বছরেরও বেশি সময় বিচার চলার পর আলোচিত এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মাহমুদ ফাইজুল কবীর আজ রায় দেন।
এ মামলায় আসামিপক্ষের দুইজন সাফাই সাক্ষীসহ মোট ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত।