মানব সভ্যতায় উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছেছে ইউরোপ। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে উন্নয়নের পাশপাশি অর্থনৈতিকভাবেও তারা হয়েছে স্বাবলম্বী। ইউরোপ বলতেই তাই শক্তিশালী অর্থনীতির একটা চিত্র ফুটে ওঠে।
তবে অবস্থা মোটেও এমন নয় যে ইউরোপে দরিদ্র কেউ বাস করেন না। ইউরোপের শহরগুলোতে যেসব বস্তি রয়েছে তাকে তিন কোটিরও বেশি মানুষের বাস। এসব বস্তিতে নেই বিদ্যুৎ ও পানির সুব্যবস্থাও।
ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এমন বেশ কয়েকটি বস্তির খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
বেশিরভাগ বস্তিতে এক ছাদের নীচে অনেকে বাস করেন৷ মাত্র চার বর্গমিটার এলাকায় তিন জন মানুষ থাকেন গাদাগাদি করে। নেই বিশুদ্ধ পানি, শৌচাগার বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷
অভিজাত শহর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠে একটি বস্তির ছবি এটি৷ ইউরোপের বিভিন্ন শহরের বস্তিতে দরিদ্র রোমাদের সংখ্যাটাই বেশি৷ এদের বেশিরভাগই শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এবং বেকার৷
বাংলাশের মতোই বেশিরভাগ বস্তি অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। তবে প্রধান শহরগুলোতে কিছু বস্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত। দরিদ্ররা এসব বস্তিতে খুব আশঙ্কার মধ্যে থাকেন। কেননা তারা শ্রেণি বৈষ্যমের শিকার এবং যেকোনো সময় তাদের বের করে দেয়ার ভয় দেখানো হয়।
ইউরোপকে ধনসম্পদে পরিপূর্ণ এবং জীবনযাপনের জন্য ভালো স্থান বলে তুলে ধরা হয়। কিন্তু ফ্রান্স থেকে সার্বিয়া বা তুরস্ক সব জায়গাতেই কিন্তু বস্তি রয়েছে। ইউরোপের সবচেয়ে বড় বস্তিটি স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কাছে অবস্থিত। ৪০ বছর আগে গড়ে ওঠা এই বস্তিতে বাস করেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
জাতিসংঘের মতে, ২০২০ সালের মধ্যে সাহারা অধ্যুষিত আফ্রিকায় মোট জনসংখ্যার ২৬.৬ শতাংশ বস্তিতে বাস করবে, যা বর্তমানের চেয়ে একটু বেশি৷ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৫৭.৭ শতাংশ মানুষ বস্তিতে বাস করবে৷ সেই তুলনায় ইউরোপের দেশগুলোতে মোট জনসংখ্যার মাত্র ২.৩ শতাংশ মানুষ থাকবে বস্তিতে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের বস্তির তুলনায় ইউরোপের বস্তিগুলোর মানুষ অবশ্য সুযোগ সুবিধা থেকে ততটা বঞ্চিত নয়। তবে বিশ্বের সব বস্তিতে একটা বিষয়ে মিল আছে আর তা হলো শিক্ষার আলো থেকে বস্তিবাসীরা বঞ্চিত।