জাতীয় উৎসবে বহুজাতিকের আগ্রাসন মেনে নিতে পারি না : মাকসুদ

জাতীয় উৎসবে বহুজাতিকের আগ্রাসন মেনে নিতে পারি না : মাকসুদ

ব্যান্ডতারকা মাকসুদুল হক মাকসুদের নেতৃত্বে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে ‘সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স’ নামের একটি সংগঠন। দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সঙ্গীতশিল্পী যোগ দিয়েছেন এই প্ল্যাটফর্মে। এদের মধ্যে রয়েছেন শাহেদ, মেহরিন, এলিটা, শায়ান, আনান ও আরো অনেকে। এই সংগঠনের ব্যানারে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে ‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব’। আগামী ১৩ এপ্রিল ৩০শে চৈত্র রাজধানীর কলাবাগান খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী এই উৎসব।

সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স সম্পর্কে ব্যান্ডতারকা মাকসুদ বলেন, ‘আমাদের দেশীয় সঙ্গীতে এখন চলছে বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসন। নানাভাবে এইসব প্রতিষ্ঠান দেশীয় সঙ্গীতকে পৃষ্ঠপোষকতার নামে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, বিদেশি শক্তি কোনোভাবেই দেশীয় সঙ্গীতের বিকাশ চায় না। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের জন্য এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। দেশীয় সঙ্গীত তথা সংস্কৃতির বিকাশের পথে এসব বাধার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যই আমরা সমমনা শিল্পীরা সম্মিলিতভাবে সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স`র প্লাটফর্মে একজোট হয়েছি’।

সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স`র প্রথম আয়োজন ‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪১৮’। বাংলা মাস চৈত্রের শেষে বছরকে বিদায় জানাতে দিনব্যাপী এই উৎসবে থাকছে কবির লড়াই, বাউল গান, কেচ্ছা পালা, ফায়ার স্পিনিং, কনসার্টসহ নানা আয়োজন। ১৩ এপ্রিল ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে অনুষ্ঠেয় এ উৎসবে দিনভর পারফর্ম করবেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া, শাহজাহান মুন্সি, টুনটুন শাহ, লতিফ শাহ, হাশেম চিশতি, নহির শাহ, বিমল শাহ, সাঈদুর রহমান বয়াতি ও তার দল, আনান, বোহেমিয়ান, এলিটা অ্যান্ড রিটেক, চিৎকার, লীলা, মাকসুদ ও ঢাকা, মেহরিন, নেমেসিস, সাহেদ ও গাছ, সায়ান, শিরোনামহীন, শূন্য, সমগীত এবং আরো অনেকে। সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব শেষ হবে রাত ১০টায়। সবার জন্য এটি থাকছে উন্মুক্ত।

‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব’ আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে মাকসুদ বলেন, “আমাদের নিজস্ব কিছু জাতীয় উৎসব আছে। যেমন : অমর একুশে, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, পহেলা বৈশাখ প্রভৃতি। এইসব উদযাপনে গত কয়েক বছর ধরে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়।  এদেশে তারা এসেছে মূলত ব্যবসার উদ্দেশ্যে। তাদের ব্যবসার প্রসারের বিজ্ঞাপন হিসেবে আমরা আমাদের জাতীয় অর্জন বা জাতীয় উৎসব তাদের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। আমাদের জাতীয় উৎসব আমরা ইচ্ছে করলেই সম্মিলিতভাবে জমকালো আয়োজনে উদযাপন করতে পারি। এরই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স`র এই উৎসব-আয়োজন।“

সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স`র পক্ষে মাকসুদ আরো বললেন, “রবীন্দ্র-নজরুল আর লালন-হাছন আমাদের চেতনার অংশ। খুব খারাপ লাগে যখন দেখি, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবহার করছে ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আবার চালু করেছে তারকাতন্ত্র। তারাই তারকা বানিয়ে শিল্পীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। আমাদের সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স তারকাতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা মনে করি, সম-মর্যাদা পাওয়া সব শিল্পীরই অধিকার। আমাদের উৎসব থেকে যদি কোনো আয় হয়, তাহলে সেটি আমরা সমবণ্টন করবো। এই মূল্যবোধ যাদের মধ্যে আছে, তাদের নিয়েই আমরা সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তুলেছি।“

সংক্রান্তি অ্যালায়েন্স আয়োজিত ‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব’কে সামনে রেখে ১০ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোটার্র্স ইউনিটি অডিটরিয়ামে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ সম্মেলনে অতিথিদের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের পুরো অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হবে এবং  উৎসবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।

বিনোদন