আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য হলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করা।
তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচনে কেউ প্রার্থী নয়, প্রার্থী হচ্ছে নৌকা। নৌকা বিজয়ী করতে হবে।’
কাদের আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নৌকা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এ বিষয়ে এখন থেকে জনসংযোগ শুরু করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় সংলগ্ন প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অধীন উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা জানতে এ যৌথসভার আয়োজন করা হয়।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি এমপি, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম ও বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমানের পরিচালনায় যৌথসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডা. এনামুর রহমান এমপি, আব্দুল মালেক এমপি, সাবিনা আক্তার তুহিন এমপি, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা হালিমা আক্তার লাবন্য।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ব্যাপারে ইতোমধ্যে তিনটি জরিপ করিয়েছেন। নির্বাচনের আগে আরো দু’তিনটি জরিপ পরিচালনা করাবেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, এ সকল জরিপে যিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হিসেবে স্থান পাবেন তিনিই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৪ সালের চেয়ে আওয়ামী লীগকে আরো যোগ্য ও স্মাট সংগঠন হিসেবে জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে এবং ২০০৮ সালের মতো একটি নির্বাচনের মাধ্যমে একইভাবে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, কানাডার আদালতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মামলার রায়ের পর দেশে বিদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইমেজ আরো বেড়ে গেছে। তাঁর জনপ্রিয়তা নতুন উচ্চতা পেয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা যত বাড়ছে, ততই ভয়ও বাড়ছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মত কোন দুর্যোগ আসলে সব শেষ হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগকে এ ধরনের অবস্থায় থাকা উচিত নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে টিকে থাকতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো দলকে জনপ্রিয় করতে হবে।
কাদের বলেন, সরকার উন্নয়নের কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে দেশে প্রযুক্তির যে বিপ্লব হচ্ছে তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবাইকে নেতা হতে চাইলে চলবে না। ভালো কর্মী হওয়ারও ইচ্ছা থাকতে হবে। কেননা আওয়ামী লীগ কর্মী নির্ভর দল। কর্মী না থাকলে আওয়ামী লীগ থাকবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার জন্য সারাদেশে সাংগঠনিক সফর শুরু করা হয়েছে। ঢাকা জেলার মত সারাদেশে প্রতিনিধি সভা করা হবে।
বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ঘোড়া যেমন ঘোলা করে পানি খায় তেমনি বিএনপিও পানি ঘোলা করে নির্বাচন কমিশনকে মেনে নিয়েছে।
আসন্ন ১৮টি উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তাদের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিকল্প কিছু নেই। কারণ আগামী নির্বাচনে তারা অংশ না নিলে তাদের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেননা এ সংগঠনটি হলো আওয়ামী লীগ বিরোধী প্লাটফর্ম। তারা মোটেও দুর্বল নয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই পড়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।