পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিলের ষড়যন্ত্রকারীদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান।
কানাডার একটি আদালতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের করা মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ এ সম্মেলন আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের মানুষের দাবী, গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিইবি)সহ যারা এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের ষড়যন্ত্রে অংশ গ্রহণ করেছিল তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যাদের জন্য দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দেশের ভাবমূর্তি বিদেশে ক্ষুন্ন হয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।’
ড. হাছান বলেন, বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনার পর টিআইবিসহ দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী ও পত্র-পত্রিকার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ দুর্নীতি প্রমাণের আগেই সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে এ প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিলের নায়ক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার সাথে তিনি (ইউনুস) ই-মেইল চালাচালি করেছিলেন। আর এ ই-মেইলে এ বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ যেভাবে এ বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন তাতে মনে হয় এ ষড়যন্ত্র ছিল সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার ফল।
‘পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক কানাডার আপিল আদালতে মামলা করে। কানাডার আদালত মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে এ মামলা আন্দাজ, গুজব ও অনুমান নির্ভর হিসেবে রায় প্রদান করে মামলার চার আসামীকে খালাস দেয় ’ বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
ড. হাছান বলেন, এ মামলার রায় বাংলাদেশে হলে এ রায়কে সরকার প্রভাবিত রায় বলে অভিহিত করার চেষ্ঠা হতো। কিন্ত কানাডার আদালতের রায়কে বাংলাদেশ সরকার কেন, সেদেশের সরকারও প্রভাবিত করতে পারে না।
তিনি বলেন, এ রায়ের পর প্রমাণ হয়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধের ষড়যন্ত্র শুধু দেশের সরকারের বিরুদ্ধে নয়, এ ষড়যন্ত্র দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে।
বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতের এ রায় সম্পর্কে কোন প্রতিত্রিয়া জানায়নি বলে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজবীর বক্তব্যের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিশ্বব্যাংক ভুল স্বীকার করে পুনরায় পদ্মাসেতু প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু সরকার এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থ গ্রহণ না করে অন্য প্রকল্পে তা প্রদানের আহবান জানিয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সামসুন নাহার চাঁপা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি উপস্থিত ছিলেন।