অামেরিকা যাওয়ার পথে পানামা খালে নিহত বাংলাদেশি অারমান শেখকে সে দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য ২৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন দালাল। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার এক দালাল আরমানের পরিবারের কাছ থেকে এই টাকা নেন।
নিহত আরমান শেখের বড় ভাই রাসেল জানান, পরিবারের তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আরমান শেখ সবার ছোট। প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করে আরমানকে আমেরিকায় পাঠাই। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার এক দলাল এই টাকা নেন। প্রায় ৬ মাস আগে আরমানকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ওমানে নেয়া হয়। সেখান থেকে আফ্রিকায় নেয়া হয়। পরে তাকে আমেরিকা নেয়ার জন্য একবার বিমানের টিকিট কাটানো হয়। কিন্তু সেখানকার বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে ফেরত পাঠায় আফ্রিকায়।
রাসেল আরো জানান, আরমানের সঙ্গে সর্বশেষ গত মাসের ২৬ তারিখ কথা হয়। এ সময় আরমান বলে, ভাইয়া মেক্সিকোর একটি নদীর পাড়ে আছি। কিছুক্ষণের মধ্যে নদী পাড়ি দিবো। আমার সঙ্গে আরো ৪ জন আছে। নদী পাড়ি দেয়ার পর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর কয়েকদিন জেলে থাকতে হবে। ১০-১২ দিন পর আবার ফোন দিব। আর ভাই ফোন দেয়নি। এখন শুনতে পাচ্ছি আমার ভাই নদীতে মারা গেছে।
তিনি আরো জানান, তারা বাবা এনামুল হকও আমেরিকায় ছিলেন। কিন্তু অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন। অনেক টাকা ঋণ করে ছোট ভাইকে আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে নিষেধ করা হয়েছিলো। কিন্তু সে জেদ করাতে তাকে পাঠানো হয়েছে। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রসঙ্গত, স্বপ্নের অামেরিকা যাওয়ার পথে পানামা খালে সোমবার রাতে মারা যান আরমান শেখ। আরমানের মরদেহ বর্তমানে ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। নিহতের সঙ্গে থাকা তার ভগ্নিপতি শাহেদ কামাল সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক বাংলাদেশি ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে, পানামা, মেক্সিকোসহ ভয়ঙ্কর জঙ্গল ড্যারিয়ান প্যাপ পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রযাত্রায় যাত্রাপথে মৃত্যুববরণ করেন অনেকে।