দ্রুত মেশিন রিডাবল পাসপোর্ট (এআরপি) পৌঁছে দিতে মালয়েশিয়ার সমুদ্র বন্দর মালাক্কায় চলছে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও পাসপোর্ট বিতরণ। দুই দিনব্যাপী মোবাইল ক্যাম্পের এ কার্যক্রম আজ বিকেলে শেষ হবে। শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. শহিদুল ইসলাম ফিঙ্গার প্রিন্ট ও পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি জানান, প্রবাসীদের সেবা প্রদানে দূতাবাসের এ মোবাইল টিম নিরন্তর কাজ করছে। মালয়েশিয়ার প্রত্যেকটি প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের হাতে ডিজিটাল পাসপোর্ট পৌঁছে দিতেই এ প্রচেষ্টা।
মালাক্কায় কর্মরত শ্রমিক ও কমিউনিটি নেতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উওরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ কূটনৈতিক দক্ষতার ফলশ্রুতিতে দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উম্মেষ ঘটেছে।
শহিদুল ইসলাম আরো জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোনে আলাপের পরিপ্রেক্ষিতে মালয়েশিয়া সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য সাময়িক ওয়ার্ক পারমিট ইস্যুর ঘোষণা দিয়েছে।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রায় তিন লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী সেদেশেই কাজের সুযোগ পাবে। তা না হলে বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফিরে আসতে হতো। তিনি অবৈধ শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, সুযোগ বারবার আসেনা। এ সুযোগ হাত ছাড়া না করে দ্রুত বৈধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
মোবাইল ক্যাম্পে বাংলাদেশিদের আবেদন জমা দেয়া এবং ডিজিটাল পাসপোর্ট বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলার (শ্রম) মো. সায়েদুল ইসলাম, ফার্ষ্ট সেক্রেটারি এম এসকে শাহীন, পাসপোর্ট-ভিসা শাখার ফার্ষ্ট সেক্রেটারি মো. মশিউর রহমান।
এছাড়া মোবাইল টিমে রয়েছেন দূতাবাসের পাসপোর্ট শাখার অফিস সহকারী সুশান্ত সরকার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: তারিক আহমেদ।
মশিউর রহমান জানান, ঘোষিত ওয়ানস্টপ সার্ভিসের অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রদেশে মোবাইল টিমের মাধ্যমে পাসপোর্ট বিতরণ ও নতুন আবেদন নেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, আগত প্রবাসীদের একদিনের মধ্যেই জন্মনিবন্ধন জমা নেয়া, ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রহণ ও ছবি তোলার কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ যেন এমআরপির আওতার বাইরে না থাকেন সে জন্য এ ক্যাম্পিং।
দূতাবাসের শ্রম শাখার কাউন্সিলর সায়েদুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মরত প্রবাসীদের সব ধরনের সেবা দিতে প্রত্যেকটি প্রদেশে মোবাইল ক্যাম্পিং এর মাধ্যমে সেবা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের যত সমস্যা থাকুকনা কেন তা সমাধানের নিরন্তর চেষ্টা করা হচ্ছে।
ফার্স্ট সেক্রেটারি এমএস কে শাহীন জানান, মোবাইল ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা সব প্রবাসীর হাতে এমআরপি পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা অনেক দিনের। তিনি আরো বলেন, দূতাবাসের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার অবৈধ শ্রমিক বৈধতার আওতায় এসেছেন। এক মাসের মধ্যেই গ্রাহকের হাতে এমআরপি পাসপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করছে দূতাবাস।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, দূতাবাস কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা ও হাইকমিশনার মো. শহিদুল ইসলামের নির্দেশনার কারনেই সমুদ্র বন্দর মালাক্কায় তারা সহজেই মেশিন রিডাবল পাসপোর্ট করতে পারছেন।