টেস্টে যেখানে ২০০ রানে এগিয়ে থাকলেই ফলোঅন হয়, সেখানে ২৯৯ রানের লিড নিয়েও বাংলাদেশকে ফলোঅনে না পাঠিয়ে উল্টো নিজেরা ব্যাটিংয়ে নামলো ভারত। সবার জানা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের ট্র্যাক রেকর্ড ভালো না। এইতো গতমাসে ওয়েলিংটনে সাউদি-বোল্টের ধারালো কিউই বোলিংয়ে বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১৬০ রানে অলআউট বাংলাদেশ। সেই দলকে ফলঅনে উল্টো ব্যাটিংয়ে নামা একটু অবাক ঠেকেছে বৈকি।
কেন আবার ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের? নানা প্রশ্ন ও জল্পনা কল্পনা। ধারণা করা হচ্ছে শেষদিনে উইকেট আরও ভাঙবে এবং তা যাতে নিজেদের বোলারদের পক্ষে যায়। বাংলাদেশ যাতে শেষ দুইদিনের ভাঙা উইকেটে স্পিনারদের চাপের মুখে পরে সেই চিন্তায় হয়তো এ সিদ্ধান্ত বিরাট কোহলির।
তৃতীয় দিন বিকেলে না হলেও চতুর্থ দিন থেকে বোলিং ক্রিজের আশে পাশে বোলারের বুটের স্পাইকে কিছু ক্ষত তৈরি হবে। আর তাতেই স্পিনারদের পোয়াবারো। এতে করে ভারতের অশ্বিন-জাদেজার মত স্পিনারদের মোকাবেলা করা একটু কঠিনই হবে বাংলাদেশের জন্য। আর এ সুবিধাটা আদায় করে নিতে চাইছেন কোহলি।
মূলত জয় নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক। চতুর্থ দিন সকালে যখন বাংলাদেশ ব্যাটিং করছিল তখন ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেকার ও সায়মন ডোল বারবার বলছিলেন এখনও এ উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে মুশফিকের ব্যাটিংয়ে। সেঞ্চুরি করার পর ডাউন দ্য উইকেট এসে বোলারদের যেভাবে আক্রমণ করেছেন তাতে কোহলির ভয় পাওয়াই স্বাভাবিক।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রেকর্ড খারাপ হলেও কখনোও কখনোও যে খোলস থেকে বেরিয়ে আসে না তা কিন্তু না। এর আগে তার প্রমাণও আছে। তদুপরি প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের বেশকিছু প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে। এ কথা জানেন কোহলি। দ্বিতীয় ইনিংসে যে তারা জ্বলে উঠবেন না তার নিশ্চয়তাই বা কি?
২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে কোণঠাসা অবস্থা থেকে ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তামিম-ইমরুলের ব্যাটিংয়ে সেবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৫৫৫ রান করেছিল বাংলাদেশ। তাই নিজেদের দিনে আবার তারা ঝলসে উঠলে ভারত আর এ ম্যাচে জিততে পারবে না। তাই চতুর্থ ইনিংসে চ্যালেঞ্জ ছুরে দিতেই কোহলির এমন সিদ্ধান্ত। এছাড়াও মিরপুরে ২০০৮ এর ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪১৩ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। আর সেটা চতুর্থ ইনিংসে। এছাড়াও ভারতের বিপক্ষেও চতুর্থ ইনিংসে তিন শতাধিক রান করেছিল বাংলাদেশ। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে সেবার ৩০১ রান সংগ্রহ করেছিল টাইগাররা।
তবে ভারত যত বেশি সময় বেশি ব্যাট করবে ততই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। বাংলাদেশের জন্যও এটা আশার খবর। এতে মুশফিক-তামিমদের বেশি সময় উইকেট থাকার চাপ কমবে। যদিও বংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের রেকর্ড খুব খারাপ। তারপরও সাকিব-তাইজুল-মিরাজ আর তাসকিন-রাব্বি মিলে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের যত বেশি সময় হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখতে পারবেন ততই মঙ্গল বাংলাদেশের।