দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরার একাধিক গ্যাংয়ের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কোন্দল হচ্ছিল। এরই জেরে ‘নাইনস্টার’ গ্রুপের নেতা তালাচাবি রাজুকে আক্রমণ করতে চেয়েছিল ‘ডিসকো বয়েজ’ ও ‘বিগবস গ্যাংয়ে’র সদস্যরা। তবে তাকে না পেয়ে সেই দলের আদনান কবিরকে আঘাত করে হত্যা করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
বুধবার র্যাবের কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাহিনীটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি জানান, টার্গেট রাজু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে এই দুই গ্রুপের সদ্যরা ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে নাইনস্টার গ্রুপের সদস্য আদনান কবিরকে আঘাত করে। এতেই আদনানের মৃত্যু হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে এই দুই গ্যাংয়ের ৮ জনকে আটক করে র্যাব।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন- ডিসকো বয়েজের দলনেতা শাহরিয়ার বিন সাত্তার সেতু ওরফে রায়হান আহমেদ সেতু ওরফে ডিসকো সেতু (২২) ও বিগবস গ্রুপের দলনেতা মো. আক্তারুজ্জামান ছোটন (১৯), শাহীনুর রহমান (১৭), রমজান মোবারক (১৭), সেলিম খান (২৩), ইব্রাহিম হোসেন ওরফে সানি (২৮), মিজানুর রহমান সুমন (২২), জাহিদুল ইসলাম জুইস (২১)।
মধ্যে জুইস সরাসরি আদনানকে আঘাত করে আর বাকিরা পরিকল্পনা থেকে শুরু করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে তদন্তে পেয়েছে র্যাব।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বিগবস গ্রুপটি ডিসকো বয়েজের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নাইনস্টার গ্রুপ ও ডিসকো বয়েজ গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৩ জানুয়ারি উত্তরা ১৩ নং সেক্টরের ব্রিজের উপর ডিসকো বয়েজ ও বিগবস গ্রুপের সদস্যরা নাইনস্টার গ্রুপের দলনেতা রাজুকে মারধর করে। প্রতিউত্তরে ৫ জানুয়ারি আজমপুর ফুটওভারব্রিজের গোড়ায় নাইনস্টার গ্রুপের সদস্যরা বিগবস গ্রুপের ছোটনকে আক্রমণ করে।
এরপর থেকেই রাজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে ডিসকো গ্যাং ও বিগবস গ্রুপের সদস্যরা। তবে রাজু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে আদনানের উপর তার ঝাল মেটানো হয়।
আটককৃতদের মধ্যে শাহরিয়ার ও ছোটন আদনান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বাকিদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে। এর আগে গত জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখ উত্তরায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে ও দেহের বিভিন্ন স্থানে স্ক্রু ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় আদনান কবিরকে।