হাঙ্গেরির প্রত্যন্ত গ্রাম এ্যাজোথালোমে মুসলিম পোশাক পরিধান করা, আজান দেয়া এবং সমকামীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ এবং মুসলিম সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। খবর বিবিসির।
গ্রামের মেয়র লাতসলো তোরোস্কাই জানিয়েছেন, তারা চান পশ্চিম ইউরোপ থেকে খ্রীষ্টান এবং সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ বিরোধীরা এখানে এসে বসতি স্থাপন করুক।
গ্রামটিতে স্থানীয়ভাবে আইন জারি করে হিজাব, আজান ও সমকামীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মসজিদ নির্মাণ নিষিদ্ধ করার জন্যও আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
তবে একাধিক আইনজীবীর দাবী, এসব আইন হাঙ্গেরির সংবিধানের বিরোধী। এ ব্যাপারে সরকার চলতি মাসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে স্থানীয় লোকজনও নতুন আইনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে।
এই গ্রামে মাত্র দু’জন মুসলিম বাস করেন। তারা হিজাব পরেন না। এই গ্রামে বাইরের মুসলিমদের নিষিদ্ধ করা হলেও এই দু’জন মুসলিম সংস্কৃতি প্রকাশ করেন না বলে গ্রামের অন্য লোকদের সঙ্গে তারা মিলেমিশে থাকতে পারছেন।
রাজধানী বুদাপেস্ট থেকে গ্রামটিতে পৌঁছাতে মাত্র দু’ঘন্টার সময় লাগে। এখান থেকে হাঙ্গেরি-সার্বিয়া সীমান্ত খুব কাছে। ইউরোপে অভিবাসী সংকটের সময় এই সীমান্ত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অন্তত ১০ হাজার মানুষ ইউরোপে প্রবেশ করেছে।
সীমান্তের পথে হাজার হাজার অভিবাসীর কাফেলা এই গ্রামের লোকদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। এতে করে অভিবাসীবিরোধী মানসিকতা তীব্র হয়ে উঠেছে। গ্রামের লোকেরা এখন পালা করে সীমান্তে ২৪ ঘন্টা পাহারা বসিয়েছেন।
নিজেদের ঐতিহ্য বজায় রাখতে চান গ্রামবাসী। মুসলিমরা এখানে এসে বসতি স্থাপন করলে তাদের ঐতিহ্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। মেয়র বলেন, ‘আমরা দেখেছি পশ্চিম ইউরোপে বড় বড় মুসলিম কমিউনিটি আছে যারা খ্রীষ্টান সমাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে নি। এখানে তা হোক তা আমরা চাইনা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই ইউরোপে ইউরেপিয়ানদের থাকুক, এশিয়া এশীয়দের থাকুক আর আফ্রিকা আফ্রিকানদের। আমাদের কথা খুব সহজ-সরল।’
এই গ্রামে বাড়ি কিনে থাকার জন্য সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছে নাইটস টেম্পলার ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি সংগঠন। বিতর্কিত ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টির নিক গ্রিফিনসহ কয়েকজন নেতা এই সংগঠনের সদস্য।
গ্রামের মেয়র বলেন, এ গ্রাম মুসলিম সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে। তার মানে কি তিনি একটি শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী গ্রাম গড়ে তুলতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আমি শ্বেতাঙ্গ শব্দটা ব্যবহার করিনি। তবে যেহেতু আমরা শ্বেতাঙ্গ, ইউরোপীয়, এবং খ্রীষ্টান তাই আমরা সেভাবেই থাকতে চাই।’