আগামী মে মাসেই পাবনার রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে অর্থায়নের ব্যাপারে ঋণ চুক্তি হতে পারে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এ চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে ওই মাসেই রাশিয়া যাচ্ছেন।
চলতি বছরে শেষ অথবা আগামী বছরের শুরুতেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২১তম বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন।
বৈঠকের পরে কমিটির সদস্য মো. শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের আলোচনার দিকগুলো তুলে ধরেন।
কমিটির সভাপতি মো. দবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন এর সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, নাছিমুল আলম চৌধুরী, মো. শাহরিয়ার আলম ও তানভীর শাকিল জয়।
কমিটির বিশেষ আমন্ত্রণে প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তার কথাগুলো জানান।
এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. আব্দুর রব হাওলাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শাহরিয়ার আলম জানান, সংসদীয় কমিটি মন্ত্রণালয়কে বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করার ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
তিনি বলেন, ‘সংসদীয় কমিটি আশা করছে মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।’
তবে ওই ঋণচুক্তিতে সুদের হার সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী কিছু জানাননি।
গত বছরের ২ নভেম্বর ঢাকায় এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে কাঠামোগত চুক্তি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন ইয়াফেস ওসমান ও রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন-রোসাটমের (রোসাতম) মহাপরিচালক সের্গেই ভি কিরিয়েঙ্কো।
এই চুক্তির আওতায় রূপপুরে ২ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এতে ১ হাজার মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট থাকবে।
এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ২০০৯ সালের ১৩ মে একটি সমঝোতা স্মারক এবং ২১ মে রূপরেখা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৬১ সালে প্রথম রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রায় ২৯২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনসহ নানা কারণে প্রায় ৫০ বছরে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়নি।
অবশেষে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে বর্তমান সরকার গত বছরের ১ আগস্ট বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরে ৩১ অক্টোবর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও আইনি কাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত সহযোগিতা চুক্তি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়।
উল্লেখ্য, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অঙ্গিকার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিলো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমান সরকারের ১০ হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে ২ হাজার মেগাওয়াট আসবে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।