উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, হয়াইশেং মসজিদটি পৃথিবীর অতি প্রাচীন মসজিদগুলোর একটি। ৬২৭ হিজরি সালে এ মসজিদটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা হজরত সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস সর্ব প্রথম এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। এ মসজিদটি ‘লাইটহাউজ বা বাতিঘর মসজিদ’ নামেও পরিচিত। এটি গুয়াংযো’র প্রধান মসজিদ।
মসজিদের নাম হুয়াইশেং। এ শব্দটির অর্থ হলো ‘জ্ঞানী লোককে স্মরণ’ আর বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মরণে এ মসজিদটির নাম করণ করা হয় হুয়াইশেং মসজিদ। চীনের তাং রাজ বংশের রাজত্ব কালে মসজিদটি নির্মিত হয়।
১৩৯০ বছরের প্রাচীন এ মসজিদটি এখন পর্যন্ত অনেকবার সংস্করণ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি একাধিকবার সংস্কার করা হলেও এর নির্মাণে চীনের ঐতিহ্য ও স্থাপত্য শৈলী অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে। মসজিদটির ভেতরের অংশটি অত্যন্ত চমৎকার কারুকার্য ও আরবি ক্যালিগ্রাফিতে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও আকর্ষণীয়।
হুয়াইশেং মসজিদটি চীনের চারটি সুপরিচিত মসজিদের একটি। অন্য মসজিদ তিনটি হলো, ইয়াংঝৌ ক্র্যান মসজিদ, কুয়ানঝৌ কিলিন মসজিদ ও হ্যাংঝৌ ফিনিক্স মসজিদ। পরবর্তীতে অন্যান্য মসজিদগুলো বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হবে।
ইমাম হল, ওয়াংয়ু চিলেকুঠুরি, ঢাকা করিডর, ইসলামি বইয়ের সংরক্ষণাগার, পাথরে খোদিত অভিলিখন প্যাভিলিয়ন ও আলোক বুরুজ। এ ছয়টি ভবন নিয়ে গঠিত মসজিদের আয়তন হলো ২ হাজার ৯৬৬ বর্গমিটার।
মসজিদটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো ১১৮ ফিট উচ্চতার সরু মিনার। যে টিকে মসজিদের আলোক বুরুজও বলা হয়। এটি এমন একটি স্থাপনা যা সিলিন্ডারের আকৃতির; এতে পাথর ও চুন-সুরকির সুনিপুন কাজ রয়েছে। বুরুজের ভেতরে রয়েছে সিঁড়িপথ। এ রকম স্থাপত্য শৈলীর মিনার চীনে আর নেই। এ আলোক বুরুজের কারণেই মসজিদটির অপর নাম ‘লাইট হাউজ বা বাতিঘর মসজিদ।’
এক সময় এ আলোক বুরুজটিকে ঝুজিয়াং নদীতে চলাচলকারী নৌকার জন্য আলোকস্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার হতো। হুয়াইশেং মসজিদ এখনো চালু আছে এবং গুয়াংঝৌর মুসলমান জনজীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য যে, হুয়াইশেং মসজিদটি ১৩৫০ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং ১৬৯৫ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এটিকে আবার পুনঃনির্মাণ করা হয়।
ইসলামের প্রথম যুগে মদিনার বাইরে যে সব দেশে ইসলামের দাওয়াত প্রচার হয়েছিল, তন্মধ্যে চীনও একটি। ইসলামের প্রচার উপলক্ষ্যে চীনে বহু মসজিদও নির্মিত হয়েছে।
চীনে বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি মসজিদ রয়েছে। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে মিনার ও গম্বুজ শোভিত মসজিদগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে যে, এটি মনে হয় মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ।