বৃক্ষমানব আবুল বাজানদারের পর এবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একই ধরনের রোগে আক্রান্ত ১০ বছরের শাহানা খাতুন।
নেত্রকোনার কলমাকান্দার উপজেলার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী শাহানা খাতুনের মুখ, থুতনি, নাক, দুই কানের লতিতে বের হওয়া উপসর্গগুলো গাছের শিকড়ের মত দেখতে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরণের রোগে এর আগে কোন মেয়ে বা নারীর আক্রান্ত হওয়ার তথ্য তাদের জানা নেই। বেশ কয়েকজন পুরুষ রোগীর বিষয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেলেও কোন নারীর ক্ষেত্রে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শাহানাকে ভর্তি করা হয়। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন বিবিসিকে জানিয়েছেন, আবুল বাজানদার অনেক পরিণত অবস্থায় তাদের কাছে ভর্তি হয়েছিলেন। শাহানার রোগের লক্ষণগুলোও অনেকটা একই ধরণের।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে রোগটি এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস বা এ ধরণের কোন রোগে আক্রান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। শাহানার রোগটির বিষয়ে এখন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
কলমাকান্দার লেংগুরা ইউনিয়নের বালুচরা গ্রামের দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার একমাত্র মেয়ে শাহানা। মেয়ের এমন রোগ নিয়ে বেশ চিন্তিত মোহাম্মেদ শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব গরীব। শাহানার যখন ছয় বছর তখন তার মা মারা যায়। আমি সত্যিই চাই ডাক্তাররা তার এই রোগ ভালো করুক।’
অসহায় এই সন্তানের প্রতি তাকিয়ে দিনমজুর পিতা দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। মা মারা যাবার পর দাদীর কাছেই শিশুটি বেড়ে উঠে।
কলমাকান্দা লেগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, আমার বিষয়টি জানা নেই, সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে দিয়ে খোঁজ নেয়ার জন্য বলেছি।
নেত্রকোনার সিভিল সার্জন আব্দুল গণি জানান, শাহানাকে স্থানীয়ভাবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়নি। তবে এই পরিবারে আরো কেউ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত আছে কিনা তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রথমে স্থানীয় হোমিও ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করানো হয়েছে। তবে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম জানিয়েছেন, মেয়েটি বিরল রোগে আক্রান্ত। তবে মেয়েটির শরীরে রোগের মাত্রা অনেক কম। তাকে দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে।