গেল ২৮ জানুয়ারি ধানমন্ডিস্থ সংগীত ও অঙ্কন শেখার পাঠশালা সুরবিহার আয়োজন করে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অণিমা রায়ের পরিচালনায় এই সংস্কৃতির পাঠশালায় প্রতিবছরের মতো এবছরও বর্ণাঢ্যভাবে সারাদেশের বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১১ টায় শুরু হয় শীত বিষয়ক অঙ্কন ও গানের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান। সংগীত বিচারক অতিথি হিসেবে অংশ নেন ইম্পেরিয়াল কলেজের শিক্ষক, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী এটিএম জাহাঙ্গীর। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের পর বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকদের তৈরি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের এই পর্বে পিঠাপুলির আকৃতি ও গুণগত মান বিশ্লেষণ করতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রন্ধনবিদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব কেকা ফেরদৌসী।
সুরবিহার পিঠা উৎসবের এই আয়োজন প্রসঙ্গে কেকা ফেরদৌসী বলেন, ‘অণিমা আমার খুব প্রিয় একজন শিল্পী। আমার রান্নার বিশেষ আয়োজনগুলোতে ওকে আমি অতিথি হিসেবে ডাকি। একাধিক অনুষ্ঠানে সে আমাকে সময় দিয়েছে। আজ ওর এত সুন্দর একটি বিদ্যাপীঠ দেখে মনে হচ্ছিল সুরবিহার যেন শান্তিনিকেতনের কোনো একটি অঞ্চল। পিঠার মান ও বিচার করাটা কঠিন, কারণ অভিভাবকেরা তাদের প্রতিটি কাজই খুব যত্ন নিয়ে করে। একই সাথে প্রায় ৫০ রকমেরও বেশি পিঠা থেকে সেরা তিনটি ক্যাটাগরি বের করার দূরহ কাজটি আমাকে করতে হলো।’
অনুষ্ঠানের আয়োজক ও মূল উদ্যোক্তা বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী অণিমা রায় বলেন, ‘আমার কাছে এটি একটি শীতকালীন উৎসব। কারণ নগর যান্ত্রিকতায় আমাদের প্রত্যেকের শৈশবে ঘুরেফিরে সেই পিঠাপুলির স্মৃতি তাড়িত হয়। যা এই প্রজন্মের সন্তানেরা জানে না। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদেরকে সেই সময়টিতে ফেরানোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। আমাদের এবারের উৎসবে তাই এমন নান্দনিক আয়োজন দেখে একজন অভিভাবক তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন। আয়োজনের সার্থকতা এখানেই বলে আমি মনে করি।’
পিঠা উৎসবে দেশেল বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক অংশগ্রহণকারীরা হলেন অণিমা রায় (আন্তেস্যা পিঠা, কেরানীগঞ্জ), লক্ষী জামান (ডিম পিঠা, বরিশাল), ক্যামেলিয়া (মুগ পাকন, বরিশাল), তন্বী রায় (সুজি পাকন, সিলেট), হালিমা খাতুন (শামুক পিঠা, কুষ্টিয়া), শারমিন হোসেন (কাটা পিঠা, শরীয়তপুর), নাসিমা আলম চুমকি (ভাপা ও পুলি পিঠা , নরসিংদী), ফারজানা চৌধুরী (গোলাপ পিঠা, ময়মনসিংহ), শামীমা (হৃদয়হরণ পিঠা , দিনাজপুর), শারমিনা জাহান (ছাছের পিঠা, রঙপুর) রোজিনা ইসলাম (পুলি পিঠা, বরিশাল), সালেমন্নেসা খানম (আলুডোবা পিঠা, কিশোরগঞ্জ), পূরবী বিশ্বাস (মালপোয়া, বরিশাল), ফিরোজা রহমান (ধনিয়া পাতার ঝাঁঝ পিঠা, রাজশাহী), নাজনীন আখতার (পুলি পিঠা, কিশোরগঞ্জ), সাবরনিা মুনাজ্জিলিন (পাটিসাপটা, ঢাকা), শারমিন বাদল (খেজুরের পিঠা, ঢাকা), জেরিন রহমান (নকশী ও ম্যারা পিঠা, ব্রাক্ষনবাড়িয়া), জেসমিন রহমান (ফুল পিঠা, ঢাকা), রুখসানা আহমেদ (তেল পিঠা, ঢাকা) প্রমূখ।