তরুণ প্রজন্মের হার্টথ্রুব গায়ক বালাম। গায়কীতে স্বতন্ত্র আঙ্গিক তৈরির মাধ্যমে পান সুপরিচিতি। টানা দুই বছর ধরে নতুন কোন অ্যালবামে নেই বালাম। শুধু গানেই নয়, বিয়ে-সংসার-সন্তানের বাবা হওয়ার পর কেন যেন মিডিয়া থেকে নিজেকে খানিকটা আড়াল করে রেখেছেন। আসন্ন বৈশাখে আড়াল ভেঙে বেরিয়ে আসছেন তিনি। বালামের দীর্ঘ প্রতিক্ষীত চতুর্থ একক অ্যালবামটি মুক্তি পাচ্ছে এবারের বাংলা নববর্ষে।
২০০৭-এ বালাম ১, ২০০৮-এ বালাম ২ আর ২০১০ সালে বালাম ৩। বালামের প্রথম দুটি একক অ্যালবাম অডিও বাজারে ব্যাপক সাফল্যের মুখ দেখলেও তৃতীয় অ্যালবামটি মোটেও আলোড়ন তুলতে পারে নি। দুই বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিলো বালামের ৩য় একক অ্যালবাম এরপর থেকে অডিও বাজারে তার দেখা নেই। মাঝে মধ্যে কিছু স্টেজ প্রোগ্রাম ও টিভি শোতে তাকে দেখা গেছে । কিন্তু অডিও বাজারে বালাম ছিলেন একবারেই অনুস্থিত। তৃতীয় অ্যালবামের ব্যবসায়িক ব্যর্থতার কারণেই সম্ভবত বালাম চতুর্থ অ্যালবামটি প্রকাশের জন্য যথেষ্ট সময় নিয়েছেন।
গত রোজার ঈদে বালামের চতুর্থ একক অ্যালবামটি বের হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। পরে বালাম জানিয়েছিলেন, কোরবানি ঈদে অ্যালবামটি রিলিজ দেবেন। রহস্যময় কারণে তখনও তাকে অ্যালবামটি মুক্তি দিতে দেখা যায়নি। যদিও এ সময় বালাম বলেছেন অ্যালবামটির কাজ তিনি প্রায় শেষ করে এনেছেন। গেল ভালোবাস দিবসের আগে আগে বেশ জোরেশোরে শোনা গেছে, রিলিজ পাচ্ছে ‘বালাম-৪’। নাহ, হতাশ হতে হয়েছে ভক্তদের। অবশেষে বালামের নতুন একক অ্যালবামটি বের হতে যাচ্ছে এবারের পহেলা বৈশাখে। এবার আর দিন পেছানোর কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বালাম।
আগের সব কটি অ্যালবামেই পপধারার গান বেশি করেছিলেন বালাম। এবার তা থেকে খানিকটা সরে এসেছেন। নানা স্বাদের গান করেছেন। অ্যালবামে গান থাকছে আটটি। চমক হিসেবে বোনাস ট্র্যাকও থাকছে। সব গানেরই কথা লিখেছেন জাহিদ পিন্টু। আগের অ্যালবামগুলো ডিজিটাল সাউন্ড বেইজড হলেও এবার বালাম অ্যাকুয়েস্টিক সাউন্ডের উপর বেশি নির্ভর করেছেন বলে জানান। রোমান্টিক, সেডিস্ট, মেলোডিয়াস গানের পাশাপাশি বালাম তার চতুর্থ অ্যালবামে সুফি ধাঁচের একটি গান করেছেন। কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি অ্যালবামের সবক’টি গানের সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন বালাম নিজেই।
অ্যালবামটি প্রসঙ্গে বালাম বললেন, শ্রোতারা এবার অন্য বালামকে পাবেন। একেবারে অন্য রকম কিছু গান করেছি। জোর দিয়েছি অ্যাকুয়েস্টিকস মিউজিকের প্রতি। আমি জানি, শ্রোতারা আমার কাছে কি চান। তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই বৈচিত্র্যময় গান দিয়ে আমার চতুর্থ একক অ্যালবামটি সাজানোর চেষ্টা করেছি। একটি সুফি ধাঁচের গান থাকছে এ অ্যালবামটিতে। এই গানটি গেয়ে আমি নিজেই বেশ আনন্দ পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমার প্রথম এককে ‘দমে দমে’ শীর্ষক একটি সুফি ধাঁচের গান করেছিলাম। গানটির জন্য ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। হঠাৎ মনে হলো এ অ্যালবামে সুফি ধাঁচের একটি গান রাখলে মন্দ হয় না। অন্য অ্যালবামগুলোতে তো প্রেমের গানই করেছি বেশি। নতুন অ্যালবামে বৈচিত্র্য আনতেই এ গানটি করা। গানটির মাধ্যমে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করার চেষ্টা করেছি। আশা করি গানটি শ্রোতাদের পছন্দ হবে।
অ্যালবামটি প্রকাশের জন্য এতো লম্বা সময় নেওয়ার কারণ জানাতে চাইলে বালাম বললেন, ইচ্ছে করেই যথেষ্ট সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে অ্যালবামটির কাজ শেষ করেছি। এ অ্যালবামের গানগুলোর কম্পোজিশনে অ্যাকুয়েস্টিক মিউজিক ব্যবহার করা হয়েছে। ডিজিটাল মিউজিকের চেয়ে অ্যাকুয়েস্টিকে কাজ করলে অনেক বেশি সময় লাগে। তাছাড়া পারিবারিক আর ব্যক্তিগত ব্যস্ততার পাশাপাশি এ সময়টায় বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল তৈরির কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
সবশেষে বালাম বললেন, কেবল জনপ্রিয়তা পাওয়ার মোহে নয়, ভালো গান দিয়েই অ্যালবামটি সাজাতে চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ‘বালাম-৪’ এর বৈচিত্রময় গান অবশ্যই আমার গানের ভক্তদের নতুনত্বে স্বাদ দিবে। সবমিলিয়ে আমি অ্যালবামটি নিয়ে খুবই আশাবাদী।