নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি। আগামী মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে প্রতিটি দলকে ৫টি করে নাম প্রস্তাব করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে নতুন ইসি গঠনের উদ্দেশ্যে সোমবার দেশের বিশিষ্ট ১২ নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করবে সার্চ কমিটি।
শনিবার দুপুরে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে দুপুর ১টার দিকে ব্রিফ করেন সচিব শফিউল আলম।
তিনি বলেন, মূলত কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতেই আজকের বৈঠক। বৈঠকের প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল, যে ৩১টি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করেছে সেই দলগুলোর কাছে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ৫টি করে নাম চাওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে প্রস্তাবিত নাম মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিবের (প্রশাসন ও বিধি) কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এই সচিব আরো বলেন, বৈঠকের দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে, সোমবার বিকেল ৪টায় জাজেস লাউঞ্জে দেশের বিশিষ্ট ১২ নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করবে সার্চ কমিটি।
১২ নাগরিক হচ্ছেন- সাবেক বিচারপতি আব্দুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এস এম এ ফায়েজ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কাশেম ফজুলল হক ও সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা।
আগামী মঙ্গলবার সার্চ কমিটি ফের বৈঠকে বসবে বলেও জানান শফিউল আলম।
আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে (আহ্বায়ক) ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে গত ২৫ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ওবায়দুল হাসান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মাসুদ আহমেদ, সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।
১০ দিনের মধ্যে সার্চ কমিটিকে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সার্চ কমিটির সদস্যদের দেয়া নামগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন।
উল্লেখ্য, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজের মেয়াদ শেষ হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য তিন নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি।
আওয়ামী লীগ এ কমিটিকে স্বাগত জানালেও বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগের পছন্দের লোকদের দিয়ে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি।
শনিবারও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা ছিল রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে গঠিত সার্চ কমিটি জনগণের সেই আশা আকাঙ্খা পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই রাজনৈতিক দল হিসাবে আমরা (বিএনপি) নতুন করে কোনো আশা দেখতে পাচ্ছি না।