সুন্দরবন রক্ষার হরতালে রাজধানীর পুলিশের সঙ্গে হরতাল সমর্থকদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সব চুক্তি বাতিল ও বিদ্যুৎ-গ্যাস সমস্যা সমাধানে ৭ দফা দাবিতে ডাকা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভকারীদের ওপর অাজ সকাল থেকে ৪ দফায় ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
সকাল ৯টার দিকে পুলিশের ধাওয়ায় শাহবাগ মোড় ছেড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলার সামনে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। এরপর পৌনে ১০টার দিকে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় রাবার বুলেট, কাদানে গ্যাস ও জলকামান থেকে গরম পানি নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।
এসব ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পুলিশের রাবার বুলেটে ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লাকি আক্তার, ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি কমিটির সভাপতি বেনজির ও মহানগর কমিটির সভাপতি কাকন বিশ্বাসসহ কমপক্ষে ১০ জন বিক্ষোভকারী অাহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন- জনস্বার্থে শাহবাগের রাস্তায় যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখা খুব প্রয়োজন। সে কারণেই হরতালকারীদের রাস্তা অবরোধকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে পুলিশের ভূমিকা ছিল শান্তিপূর্ণ।
তিনি বলেন- পুলিশ শুধু জলকামান, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করেনি। সুতরাং আন্দোলনকারীদের কেউ আহত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের দমাতে জলকামান ব্যববহার করে পুলিশ।
হরতালের সমর্থনে পিকেটিং দমাতে এ দিন ভোর বেলা থেকেই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পুলিশ। শাহবাগ থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়ন করা হয়। দাঙ্গা পুলিশসহ বেশ কয়েকটি জলকামানও চোখে পড়ে এসময়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড়ে পুনরায় অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করেন।
এসময় পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয় ও ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস ও ররাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামানও ব্যবহার করতে দেখা যায় পুলিশকে। এক পর্যায়ে পিছু হটে মিছিলকারীরা পল্টনের দিকে ফিরে যান। পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাও ঘিরে রাখে। হরতালের সমর্থনে ক্যাম্পাসের মিছিলগুলো অাটকে দেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে এ হরতাল ও বিক্ষোভের ঘোষণা দেন। হরতাল চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত ।