আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপির ‘ভারত তোষণনীতির”র অভিযোগে সমুদ্রসীমা নিয়ে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সরকারের আইনি লড়াইয়ের পদক্ষেপকে জবাব হিসেবে তুলে ধরলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
“আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করতেও কুণ্ঠাবোধ করিনি, যা বিএনপি কল্পনাও করতে পারে না,” শুক্রবার এক আলোচনা সভায় বলেছেন তিনি।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইডিইবি) ৩৬তম জাতীয় সম্মেলনের ওই অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে আইনি লড়াইয়ের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন হানিফ।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হানিফ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন, “অসত্য তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। আমরা বিভক্তির রাজনীতি করতে করতে দেশকে পিছিয়ে ফেলেছি। দেশকে আরো বিভক্ত করবেন, তা হবে না।”
সমুদ্রসীমার রায় নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে বাংলাদেশের জয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানানোর দুই সপ্তাহ পর গত ১ এপ্রিল এই জয়কে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ হিসাবে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণে বাংলাদেশ যদি লাভবানই হয়ে থাকে, তাহলে কেন বঙ্গোপসাগরের ব্লকগুলোতে কর্তৃত্ব আমরা পেলাম না। আমরা মনে করি, সমুদ্র জয়ের প্রচারণা সরকারের একটি শুভঙ্করের ফাঁকি।”
গত ১৪ মার্চ সমুদ্র আইন বিষয়ক আন্তর্জাতিক আদালত বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন দুইশ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তারের পক্ষে রায় দেয়; যা বাংলাদেশের বড় অর্জন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
রায় ঘোষণার পরদিনই বিএনপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অভিনন্দন জানিয়েছিল। এছাড়া সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াও ওই জয়ের জন্য ধন্যবাদ জানান।
হানিফ বলেন, “তাহলে কিছু না জেনে, না বুঝেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন।”
সমুদ্র সীমা নিয়ে ভারতের সঙ্গেও আইনি লড়াইয়ে গেছে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৪ সালে ওই রায়ও বাংলাদেশের পক্ষে আসবে বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ।
আইএসআইয়ের কাছ থেকে বিএনপির ‘অর্থ নেওয়ার’ প্রসঙ্গ আবার তুলে ধরে তিনি বলেন, “পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই তারা অর্থ দিয়েছে।”
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে ১৯৯১ সালে বিএনপি অর্থ নিয়েছিল বলে আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করে আসছে। তবে বিএনপির দাবি, এই অভিযোগ সত্য নয়।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ওই সম্মেলনে এই পেশাজীবীদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন তার বিশেষ সহকারী হানিফ।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের শূন্য পদগুলো পূরণে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইডিইবির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইডিবি’র সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান বক্তব্য দেন।