‘আরো মানুষ মারার জন্যই সময় চাইছে মিয়ানমার’

‘আরো মানুষ মারার জন্যই সময় চাইছে মিয়ানমার’

মিয়ানমার সময় এবং সুযোগ চাইছে আরো মানুষ মারার জন্য। এমন মন্তব্য করেছেন, লন্ডনে আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের নেতা নুরুল ইসলাম। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য সময় এবং সুযোগ দিতে বিশ্বের কাছে মিয়ানমারের আহ্বান জানানোর পরই এমন মন্তব্য করলেন নুরুল ইসলাম।

দেশটির তরফ থেকে জানানো হয় অতিরিক্ত সময় এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য কিছুটা বাড়তি পরিসর প্রয়োজন তাদের। খবর বিবিসি এবং ট্রিবিউন ইন্ডিয়ার।

দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিষয়ে সমাধানের একটি পথ খুঁজে বের করার সময় এবং সুযোগ প্রদানের জন্য বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সহকারী প্রতিরক্ষা প্রধান মাইন্ট নি। দেশের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জিহাদি সংগঠনগুলো সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে একটি নিরাপত্তা ফোরামের সঙ্গে আলোচনার সময় মাইন্ট জানান, রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত তার সরকার। এ বিষয়ে তারা খোঁজ খবর রাখছেন।

গত বছরের অক্টোবরে রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। সীমান্তে পুলিশের চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই অভিযান শুরু হয়। অভিযানের নাম করে সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অমানবিক নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন এবং বাড়ি-ঘর আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে রোহিঙ্গারা। তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করছে সেনাবাহিনী।

সেনাদারের অমানবিক নির্যাতনে বাধ্য হয়ে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের এমন আচরণে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা এবং নিন্দা জানানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলে বেশ চাপের মুখে রয়েছে মিয়ানমার।

এক বিবৃতিতে মাইন্ট বলেন, ‘সরকার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধকে ক্ষমা করবে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মাইন্ট আরো বলেন, ইয়াংগুন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই এই সমস্যা সমাধানে একটি চূড়ান্ত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে মিয়ানমারকে সময় এবং সুযোগ দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মিয়ানমার সরকার কি তাহলে সত্যিই এখন এই সংকটের অবসান করতে চাইছে না কি এটা শুধু কালক্ষেপণের কৌশল? এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার সংকটের অবসান চাইছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’

তার ভাষ্যমতে, ‘মিয়ানমার অতিরিক্ত সময় চাইছে আরো মানুষ মারার জন্য। সমাধানের জন্য সময় চাইছে এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তারা যদি সত্যিকার অর্থে সমাধান চাইতো তাহলে তারা আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে রাখাইনে প্রবেশ করতে দিতো। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাউকে এখন পর্যন্ত প্রবেশ করতে দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। দুনিয়াতো জানে না সেখানে কী হচ্ছে। নিরপেক্ষ কেউ যদি সেখানে না ঢুকতে পারে তাহলে কিভাবে আমরা বিশ্বাস করবো?’

মিয়ানমারকে কোনো সময় দেয়া উচিত নয় বলে মনে করেন নুরুল ইসলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে আরো বেশি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এখনও রাখাইন রাজ্যে অত্যাচার নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন এই রোহিঙ্গা নেতা। রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতি সংকটজনক বলে উল্লেখ করে জাতিসংঘের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক