‘থাকলে শিশু বিদ্যালয়ে হবে না বিয়ে বাল্যকালে, থাকলে শিশু লেখাপড়ায় সফল হবে জীবন গড়ায়’_ স্লোগানে একসঙ্গে লাখো কণ্ঠে বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানিকে লাল কার্ড দেখানোর প্রস্তুতি নিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে ‘বাল্যবিয়েকে না বলুন’ লাল কার্ড প্রদর্শন করা হবে। একই সময়ে জেলার ১১ উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বাল্যবিয়েকে ‘লাল কার্ড’ দেখাবে। বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণার পর পুরো জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. জামালউদ্দীন আহমেদ সুনামগঞ্জ জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা করবেন।
অতীতের সব রেকর্ড পেছনে ফেলে সারা পৃথিবীতে এই প্রথম সুনামগঞ্জে একসঙ্গে লাখো কণ্ঠে লাল কার্ড প্রদর্শনের বিষয়টিকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অন্তর্ভুক্তির জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানের আয়োজক সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সুনামগঞ্জ জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণাকালে বাল্যবিয়েকে লাল কার্ড দেখিয়ে একসঙ্গে লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হবে ‘বাল্যবিয়ে করব না, বাল্যবিয়ে দেব না, বাল্যবিয়ে মানব না’। লাল কার্ড প্রদর্শন অনুষ্ঠানে একসঙ্গে জেলার সব মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজিয়েট স্কুলের ১ লাখ ৬ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী অংশ নেবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার জামালউদ্দীন আহমেদের অনুপ্রেরণায় সুনামগঞ্জ জেলা-উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট, জেলা ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ বিশেষ এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে লাখো কণ্ঠে লাল কার্ড প্রদর্শনের বিষয়টি অতীতের সব রেকর্ড পেছনে ফেলবে। তাই বিষয়টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অন্তর্ভুক্তির জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের শর্ত পালনের লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা।’
লাল কার্ডে লেখা রয়েছে_ ‘বাল্যবিয়ে ও যৌন হয়রানিকে লাল কার্ড’। এ ছাড়া ওই লাল কার্ডে সংশ্লিষ্ট উপজেলা ইউএনও উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও থানার ওসির সরকারি মোবাইল নম্বর উল্লেখ রয়েছে। যাতে কোথাও কোনো শিশু ও কিশোরী বাল্যবিয়ে বা নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিরোধ বা সহায়তার জন্য স্থানীয় ইউএনও, ভাইস চেয়ারম্যান ও থানার ওসির সহযোগিতা পেতে পারে।
সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি গৌরি ভট্টাচার্য বলেন, ‘লাল কার্ড দেখিয়ে একসঙ্গে লাখো কণ্ঠে বাল্যবিয়েকে না বলতে জেলা প্রশাসকের এই মহতী উদ্যোগকে আমরা স্বাগত ও শ্রদ্ধা জানাই। এতে মেয়েরা আরও সচেতন হবে এবং জেলায় বাল্যবিয়ে হ্রাস পাবে। শিশু-কিশোরীদের প্রতিভা বিকশিত হবে।’ – See more at: http://bangla.samakal.net/2017/01/23/264897#sthash.XvHDvRcS.dpuf