কম খরচে ফলন বেশি, পোকা-মাকড়ের ঝামেলা নেই, চাষে কম শ্রম এবং সর্বোপরি ফলন ভালো হওয়ায় ভ্ট্টুা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন ভোলার সাধারণ কৃষকরা।
এ বছর প্রথমবারের মতো ভুট্টা চাষ করেই তারা এখন নতুন করে ভুট্টা চাষের স্বপ্ন দেখছেন।
কারণ হিসেবে এলাকার কৃষকরা জানালেন, ফলন ভালো হওয়ায় অন্য ফসল চাষীরাও এখন ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এছাড়া এর চাষে খরচ কম ও ঝামেলা অপেক্ষাকৃত কম থাকায় লাভের পরিমাণও বেশি হবে চিন্তা করে অন্য ফসল চাষীরাও এখন ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
এদিকে, স্থানীয়রা জানান, ধান, সুপারি ও পানের জন্য ভোলা বিখ্যাত হলেও এবার চাষীরা ঝুঁকে পড়েছেন নতুন ফসল ভুট্টার দিকে। অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে বেশি লাভ হওয়ায় তাদের ভাগ্য বদলে যাচ্ছে। এতে করে তাদের আর্থিক অবস্থাও উন্নতির দিকে। ভাগ্য বদলের আশায় এখন অনেক ধানচাষীও ভুট্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছেন।
এবিষয়ে ভোলা সদরের বড় চর সামাইয়া গ্রামের ভুট্টা চাষী মাকসুদ ও রতন বলেন, ‘এতদিন ভোলার গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা সারাদিন ক্ষেত-খামারে কাজ করেও কাঙ্খিত পরিমাণ ফসল পাচ্ছিলেন না। এর ফলে, অনেক জমিই বছরের পর বছর অনাবাদি থেকে যেত। সে কারণে কৃষকদেরও অভাব দূর হতো না। কিন্তু, এবার ভুট্টা চাষে তাদের ভাগ্য বদল হচ্ছে।’
স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন বলে তারা স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন। আবার এদিকে একজনকে লাভবান হতে দেখে অন্য চাষীরও এদিকে ঝুঁকে পড়েছেন বলে জানান মাকসুদ ও রতন।
অপরদিকে, কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৬শ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড প্রজাতির ভুট্টার আবাদ হয়েছে। ভোলার ৭ উপজেলায় বিগত দিনের চেয়ে এখন ভুট্টা চাষ বেড়ে গেছে।
কৃষি অফিস জানায়, এখন ভুট্টার থোর পাকতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই ক্ষেত থেকে তুলে আনা যাবে। সবকিছু দেখে ফলন অনেক ভালো হবে বলে মনে করছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
ভুট্টাচাষী মফিজ ও শাজাহান বলেন, ‘অন্য ফসলের তুলনায় কীটনাশক ও সারের প্রয়োজন কম হওয়ায় চাষীরা অনেক খুশি। ভুট্টায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।’
কৃষি অফিসের সূত্র অনুযায়ী, ভোলার প্রত্যন্ত এলাকা বাগমার, চর সামাইয়া, চন্দ্র প্রসাদ, চরপাতা, পক্ষিয়া, হাসান নগর ও চর খলিফা এলাকায় এখন কৃষকরা ভুট্টার ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেখানকার প্রায় ৩ হাজার চাষীর মধ্যে খুশির বন্যা বইছে। দিন দিন তাদের ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
চাষীরা জানান, জেলার কৃষি সম্প্রারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা ছাড়াও সিসা সিমিটের অর্থায়নে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা ভুট্টা চাষ বাস্তবায়ন করছে। ফলে, দিন দিন ভুট্টা চাষীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউল হক ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এ বছর ভুট্টার ফলন অনেক ভালো। আগামীদিনে চাষীরা আরও বেশি করে ভুট্টার চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।’