‘ছিলাম পৌরসভার চেয়ারম্যান। পরে সে পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে হয়েছি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। কারণ, পৌরসভার পরিসর ছোট। তাই বেশি মানুষের সেবার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি। এরপর সরকার উপজেলার জন্য বরাদ্দ দিয়েছে ১৯ লাখ টাকা। অথচ এমপি সাহেব আমাকে ১৯ টাকাও দেননি। তিনি ইউনএনওকে মানা করেছেন, যেন আমাকে কোনো টাকা না দেওয়া হয়।’
সামাজিক পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জাতীয় কনভেনশনে আলোচনাকালে এ কথা বলেন কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজির আহমেদ।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মজির আহমেদ বলেন, ‘২০০২ সালে লাকসাম পৌরসভার চেয়ারম্যান হই। পরে বড় পরিসরে সেবা করার জন্য স্বতন্ত্রভাবে উপজেলা পরিষদে নির্বাচন করে হলাম চেয়ারম্যান। কিন্তু আমার সে আশায় গুড়ে বালি। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। উপজেলা পরিষদের একটি ফাইলেও স্বাক্ষর করতে পারিনি।’
মজির আহমেদ বলেন, ‘সরকার একটি গাড়ি দিয়েছিলো। সে গাড়িটি এখনো একদিনের জন্য ব্যবহার করিনি। কারণ, আমার লাকসামের রাস্তাঘাট ভালো না। গাড়ির চালকও নেই। উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান হিসেবে আমার আওতায় আছে শুধু দুটি পিয়ন।’
তিনি বলেন, ‘সরকার উপজেলার জন্য ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আমাদের এমপি সাহেব নির্বাহী কর্মকর্তা বলে দিয়েছেন, আমাকে যেন ওই টাকা না দেওয়া হয়। সেখান থেকে আমি ১৯ টাকাও পাইনি। তাহলে আমি জনগণের কিভাবে সেবা করবো।’
অনুষ্ঠানে নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা খেজুর গাছের মতো। এক সরকার একবার আমাদের সামনের দিকে কেটে রস নেয়। আবার অন্য সরকার পরের বছর পেছনের দিকে কেটে রস নেয়। কিন্তু আমাদের কোনো অধিকার দেয় না। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনগণের সেবায় কাজ করি। জন্ম নিবন্ধন থেকে শুরু করে মৃত্যু নিবন্ধন পর্যন্ত সবখানে আমাদের স্বাক্ষর করতে হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ধানের শীষ বা নৌকা দিয়ে জয়লাভ করি না। আমরা নিজের যোগ্যতায় ও জনপ্রিয়তায় জয়লাভ করি।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও দৈনিক স্বাধীন মতের সম্পাদক ড. খন্দকার আলী আজম।
অনুষ্ঠানে ৩২টি জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সম্মাননা দেওয়া হয়।