সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করার প্রায় ৯ মাস পরও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণের থানা এবং ওয়ার্ডগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি এখনও প্রক্রিয়াধীন।
জানা গেছে- ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনের ৩ বছর ৩ মাস পর ঢাকা মহানগর আওয়ামীগকে দুইভাগে বিভক্ত করে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ঢাকার ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের অন্তর্গত ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। যদিও এসব থানা ও ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল প্রায় ৯ মাস আগে।
এ অবস্থায় গত ২ জানুয়ারি রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদেরকে অবিলম্বে মহানগরের সব থানা, ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছিলেন, ‘মহানগরের অন্তর্গত সব থানা এবং ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি শিগগিরই করতে হবে। এ কমিটিতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ নারী কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারীরা সংখ্যায় অর্ধেক তাই কমিটিতে তাদের গৌণভাবে দেখার সুযোগ নেই। তাই ৩০ শতাংশ নারীসহ পূর্ণাঙ্গ কমিটি অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে নগর নেতাদের।’
এরপরই মহানগরের এসব থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে নগর নেতারা দাবি করছেন।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ-প্রত্যাশীদের বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের নেতারা খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। খসড়া তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কমিটিগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘দল ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই দলীয় পদ-পদবী পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তখন দলের অনেক ত্যাগী নেতা অবমূল্যায়ীত হন। তাই নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের খোঁজ-খবর নিয়ে কমিটি করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, ‘দলের সাধারণ সম্পাদকের (ওবায়দুল কাদেরের) নির্দেশে ওয়ার্ড-থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। দলের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ অনুযায়ী সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে আমরা প্রস্তুত।’
২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ ও ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২০তম জাতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। আর ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর তিন বছর তিন মাস পর ২০১৬ সালের এপ্রিলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুই ভাগ করা হয়।