জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এ রায়ের ফলে তিনি এই উপ-নির্বাচনে আর প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে উপ-নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে ৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন। জাগো নিউজকে এই তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. মুহাম্মদ ইয়াসিন খান।
আদালতে আজ কাদের সিদ্দিকীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী। অপরদিকে অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ইলেকশন কমিশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ড. মুহাম্মদ ইয়াসিন খান। তার সঙ্গে ছিলেন কামরুন্নাহারা তামান্না ও শাহরিয়া ইয়াসীন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে আদেশ দেন ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত। সঙ্গে সঙ্গে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকীর আনা আপিল আবেদন দুই সপ্তাহের জন্য (স্ট্যান্ডওভার) মুলতবি করেন চেম্বার জজ আদালত।
এর আগে, একই বছর ৪ ফেব্রুয়ারি কাদের সিদ্দিকীর করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জারি করা রুল ও রিট খারিজ করে রায় দেন। কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ নয় বলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন আদালত। এরপর হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতির আদালতে আপিল আবেদন করেন কাদের সিদ্দিকী।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী হজ, তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করেন। পরে তাকে বহিষ্কার করে তার দল আওয়ামী লীগ। মন্ত্রিসভা থেকেও তাকে অপসারণ করা হয়।
পরে ৩ সেপ্টেম্বর শুন্য আসন বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। এরপর নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। সে মোতাবেক ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর এখানে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই শূন্য আসনে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেন লতিফ সিদ্দিকীর ভাই কাদের সিদ্দিকী। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ঋণ খেলাপের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
এর বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে তা ১৮ অক্টোবর খারিজ হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টও বহাল রাখেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন কাদের সিদ্দিকী।