নাইজেরিয়ায় বোকো হারামের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে বিমান বাহিনী। মঙ্গলবার ওই অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গিদের ওপর হামলা চালানোর পরিবর্তে ভুলবশত একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে বিমান বাহিনী।
ওই হামলায় শতাধিক শরণার্থী এবং শ্রমিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো দুই শতাধিক মানুষ। বোর্নো স্টেটের স্থানীয় কর্মকর্তাদের তরফ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এপি, বিবিসির।
সামরিক কমান্ডার মেজর জেনারেল লাকি ইরাবোর নিশ্চিত করেছেন যে, ক্যামেরুন সীমান্তের কাছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রান শহরে ভুলবশত বিমান হামলায় কয়েকজন বেসামরিক নিহত হয়েছে।
এই প্রথম নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী এ ধরনের ভুল করল। জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের ওপর হামলার লক্ষ্য ভুল হয়ে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক।
বোকো হারামের হামলার ভয়ে পালিয়ে দেশটির বোর্নো প্রদেশের উত্তরপূর্বের শহর রানের ঐ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু মানুষ।
সরকারের কাছে তথ্য ছিলো ঐ এলাকায় জঙ্গিরা জড়ো হচ্ছে। এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই বিমান বাহিনীকে আক্রমণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
লাকি ইরাবো জানিয়েছেন, ওই স্থানে বোকো হারাম জঙ্গিরা জড়ো হচ্ছে বলে তাদের কাছে তথ্য আসে। তখনই বিমান বাহিনীকে হামলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। বিমান হামলা চালানো হয় কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ভুল যায়গায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
হতাহতের এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা এমএসএফ বিপুল সংখ্যক হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তারা পার্শ্ববর্তী দেশে তাদের অন্যান্য দলকে প্রস্তুত রেখেছে সহায়তা বাড়ানোর জন্য। ওই হামলার ঘটনায় রেডক্রসের অন্তত ছয় কর্মী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির মুখপাত্র আলেকজান্দ্র মাতিযেভিক।
তিনি বলেছেন, নিহত ছয়জন রেডক্রস সদস্য এবং আহত আরো ১৩ জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক শহরের ওই শিবিরে ২৫ হাজার উদ্বাস্তুদের খাবারের সংস্থান করতে এসেছিলেন। এই মুহুর্তে অন্যান্য ত্রাণ সংস্থার সহায়তায় জরুরি চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির সেনাবাহিনীর তরফ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ভুলবশত হামলায় বেসামরিক জনগণের এতটা ক্ষতি এর আগে কখনো হয়নি। ওই এলাকায় সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে সরকারের তরফ থেকে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।