শুক্রবার থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠ টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হয়েছে ৫২তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইজতেমায় অংশ নিতে কয়েক দিন আগে থেকেই তুরাগ তীরে জড়ো হয়েছেন মুসল্লিরা। শীতকে উপেক্ষা করে মন দিয়ে শুনছেন বয়ান। তবে তাদের পাশেই অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের মনোযোগ মানুষের চলাফেরার দিকে।
কেউ মুসল্লিদের ব্যাগ তল্লাশি করছেন। কেউ ওয়াকিটকিতে ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা শুনছেন। কেউ আবার ১০০ ফিট উপরে দূরবিন দিয়ে মাঠে নজর রাখছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা দেয়াকেই শ্রেষ্ঠ ইবাদত মনে করছে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ইজতেমা ও নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপ-পরিদর্শক (একআই) মর্যাদার এক পুলিশ কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, দুদিন ধরে দাঁড়িয়ে ইজতেমার বয়ান শুনছি। কিন্তু দু-একটি কথা ছাড়া কিছুই বলতে পারবো না। মুসল্লিদের দায়িত্ব যেমন ইবাদত করা, আমাদেরও দায়িত্ব তাদের নিরাপত্তা দেয়া। তাদের নিরাপত্তাই আমাদের শ্রেষ্ঠ ইবাদত বলে মনে করছি।
সরেজমিন তুরাগ তীরে গিয়ে ইজতেমার নিরাপত্তায় বিপুল সংখ্যক র্যাব, পুলিশ, আনসার ভিডিপি ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেল।
ইজতেমা মাঠের প্রতিটি প্রবেশ গেটে রয়েছে ৫-৬ জন পুলিশ সদস্য। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তারা ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের ব্যাগ তল্লাশি করছেন। সন্দেহভাজনদের দেহ তল্লাশিও করতে দেখা গেছে তাদের।
নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ইজতেমা মাঠে প্রবেশের জন্য যতগুলো গেট করা হয়েছে সেই সড়কগুলোতে হকার ও ফেরিওয়ালাদের বসতে দেয়া হচ্ছে না।
এবারের ইজতেমায় দেশি-বিদেশি লাখো মুসল্লির নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ হাজার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। মাঠ পর্যবেক্ষণে রয়েছে নয়টি ওয়াচ টাওয়ার। প্রতিটি ওয়াচ টাওয়ারে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন ২ জন করে পুলিশ সদস্য।
এদিকে ইজতেমা মাঠ, আশপাশের এলাকা ও প্রতিটি মোড়ে বসানো হয়েছে চারমুখী সিসিটিভি ক্যামেরা। রয়েছে র্যাব-পুলিশের কন্ট্রোল রুম। সেখানে চলছে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ।
ইজতেমার মাঠের পাশেই প্রস্তুত রয়েছে র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট এবং ডগ স্কোয়াড। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তুরাগ নদীতে দুটি স্পিড বোটকেও টহল দিতে দেখা গেছে।
রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব। আগামী ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।